কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মাস দুয়েক পেরিয়ে গিয়েছে।
তদন্তের স্বার্থে শিক্ষা দফতরের কাছ থেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি চেয়েছিল সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এখনও সেই নথি তারা পায়নি। ওই নথির বিষয়ে এ বার আদালতে আবেদনের পথে সিবিআই। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, কল্যাণময়ের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি চেয়ে গত দু’মাসে দু’বার যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল, তার প্রেক্ষিতে শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য কী ছিল, এ সবই আদালতে পেশ করা হবে। এর পর বিচারকের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, প্রথম দফায় চিঠি দেওয়ার পরে জানানো হয়েছিল, কল্যাণময়ের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সিবিআইয়ের দাবি, তাদের শিক্ষা দফতর জানায়, ২০২২ সালে এক বার ওই নথির খোঁজ করা হয়েছিল। কিন্তু তখন তা না পাওয়ায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রের খবর, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ যে তদন্ত করেছিল, তার রিপোর্টও সিবিআই চেয়ে পাঠিয়েছিল। তাদের অভিযোগ, সেই রিপোর্টও তাদের দেওয়া হয়নি।
তদন্তকারীদের দাবি, কল্যাণময়ের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি শুধুমাত্র শিক্ষা দফতরে ছিল না। ওই নথির প্রতিলিপি নবান্ন ও খোদ কল্যাণময়ের কাছেও থাকা উচিত। তাই, নথি নিখোঁজ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার পরে পাল্টা চিঠি দিয়ে কোনও ভাবে সেই সব নথি জোগাড় করে পাঠানোর কথা বলেছিল সিবিআই। এ নিয়ে তারা কল্যাণময়কেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু তার পরেও নথির বিষয়ে শিক্ষা দফতর থেকে কিছুই জানানো হয়নি বলে সিবিআইয়ের দাবি।
তদন্তকারীদের কথায়, বেআইনি ভাবে নিয়ম ভেঙে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও কল্যাণময়কে শিক্ষা দফতরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছিল। তাঁদের দাবি, একাধিক বার মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে কল্যাণময়ের নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। সে ক্ষেত্রে কল্যাণময়ের নিয়োগ সংক্রান্ত নথির প্রতিলিপি নবান্নতে থাকা উচিত বলেও সিবিআইয়ের দাবি।
উল্লেখ্য, কল্যাণময় বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন। তিনি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কল্যাণময় পার্থর শ্বশুরবাড়ির দিকে দূর সম্পর্কের আত্মীয় বলেও সিবিআই জানতে পেরেছে। সিবিআইয়ের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে কল্যাণময়ের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে বলে তদন্ত উঠে এসেছে। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, কল্যাণময়কে এত প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল কেন?