— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তে চিকিৎসক অপূর্ব বিশ্বাসকে ফের এক বার তলব করল সিবিআই। মঙ্গলবার দুপুরে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসে পৌঁছন তিনি। অপূর্ব আরজি করের নির্যাতিতার দেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। দুপুর ২টো নাগাদ সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে যান তিনি। প্রায় দেড় ঘণ্টা ছিলেন সিজিওতে। যদিও কী কারণে তাঁকে তলব করা হয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। সিবিআই দফতর থেকে বার হওয়ার পর কোনও মন্তব্য করতে চাননি চিকিৎসক।
এর আগেও দু’বার তাঁকে তলব করা হয়েছিল সিবিআই দফতরে। রবিবার সিজিও কমপ্লেক্সে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতর থেকে বার হয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, মৃতার দেহের দ্রুত ময়নাতদন্ত করার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ দেওয়া হয়েছিল। মৃতার কাকা পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তির তরফে এই চাপ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। তাঁকে নাকি ওই ‘কাকা’ হুমকি দিয়েছিলেন, “তাড়াতাড়ি ময়নাতদন্ত না-হলে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেব।” পাশাপাশি আরজি করের প্রাক্তন সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠকেও ডাকা হয়েছে সিবিআই দফতরে।
রবিবার সন্ধ্যায় অপূর্বের ওই মন্তব্য ঘিরে বিস্তর চর্চা হয়েছে। নির্যাতিতার সেই ‘কাকু’ আসলে কে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। পরে উঠে আসে সঞ্জীব নামে এক ব্যক্তির পরিচয়, যাঁকে নির্যাতিতা ‘কাকু’ বলে সম্বোধন করতেন। এরই মধ্যে সোমবার সিবিআই দফতরে গিয়েছিলেন পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ। তিনি সিবিআই দফতর থেকে বার হওয়ার পরেই ওই ‘কাকু’ গিয়েছিলেন বিধায়কের সঙ্গে দেখা করতে। যদিও পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি অপূর্বের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন ছিল, ‘‘ডাক্তারবাবু বললে ঠিক, আমি বললে ভুল? ডাক্তারবাবুরটাই বেদবাক্য! আমি বলছি, ওই ব্যক্তি আমি ছিলাম না। ওই জায়গায় বড় বড় পুলিশকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আমি বললে কি কিছু হবে? অত বড় হাসপাতালে ওই ডাক্তারকে কী করে চিনব? কে ময়নাতদন্ত করবেন, তা জানব কী করে?’’
উল্লেখ্য, নির্যাতিতার দেহ দাহ করার সময়েও তিনি উপস্থিত ছিলেন শ্মশানে। দাহ করানোর নথিতেও তাঁর সই রয়েছে। সে প্রসঙ্গেও তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওঁর বাবা ডেকেছিলেন তখন। মেয়ের মৃত্যুর পর ওঁদের মাথা ঠিক ছিল না। দাহের শংসাপত্রে আমি সই করি। সেই কাগজ ওদের বাড়িতে ছিল। পরের দিন সেটা নিয়ে পুরসভা থেকে মৃত্যুর শংসাপত্র নিয়ে আসি।” এই আবহেই মঙ্গলবার ফের সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হল নির্যাতিতার ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে।
পাশাপাশি আরজি করের প্রাক্তন সুপার সঞ্জয়ও মঙ্গলবার দুপুরে গিয়েছেন সিবিআই দফতরে। আরজি করের নির্যাতিতার মৃত্যুর সময় হাসপাতালের সুপার ছিলেন তিনি। পরে বিতর্কের আবহে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার পর থেকে গত এক মাসে কখনও সিবিআইয়ের দল গিয়েছে আরজি করের প্রাক্তন সুপার সঞ্জয়ের বাড়িতে, কখনও তাঁকে তলব করা হয়েছে সিবিআই দফতরে। একাধিক বার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা।