ফাইল চিত্র।
প্রায় আট মাসের বিরতির পর সারদা তদন্তের শেষ ধাপের দৌড় শুরু করল সিবিআই।
গত মঙ্গলবার দিনভর রাজ্য পুলিশ থেকে অবসর নেওয়া ডিএসপি দিলীপ হাজরার বর্ধমানের বাড়িতে তল্লাশি চালাল তদন্তকারী সংস্থা। লকডাউন এবং করোনার আবহে তল্লাশি চালানোর জন্য দিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতর থেকে ডিরেক্টরের বিশেষ অনুমতি আনতে হয়েছে কলকাতা জ়োনকে। তার পরেই তদন্তকারী অফিসারেরা মাস্ক পরে, স্যানিটাইজ়ার নিয়ে তল্লাশিতে যান বলে দাবি। তল্লাশির সময়ে দূরত্ব বিধিও মানা হয়েছে বলে সিবিআইয়ের দাবি। তাঁদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনার সময় এই প্রথম তল্লাশিতে বেরনো হল। তদন্তের প্রয়োজনে তল্লাশি জরুরি বলেই সদর দফতর থেকে অনুমোদন এসেছে এবং তার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে।
সারদা তদন্তে রাজ্য সরকারের গঠন করা সিটের হয়ে তদন্ত করেছিলেন দিলীপ হাজরা। সে সময় তিনি বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ইনস্পেক্টর পদে বহাল ছিলেন। দিলীপের নেতৃত্বেই সুদীপ্ত সেনের অফিস, বাড়ি-সহ নানা আস্তানায় তল্লাশি চালিয়েছিল সিট। মিডল্যান্ড পার্ক এবং অন্যান্য অফিস থেকে নথি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা ছিল দিলীপবাবুর। এর আগেও বার কয়েক সিবিআই তাঁকে তলব করেছিল। কখনও তদন্তে সাড়া দিয়েছেন, কখনও রাজ্য কর্তাদের পরামর্শে আদালতে গিয়ে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হওয়া থেকে ছাড় চেয়েছিলেন তিনি।
কেন সিবিআই তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাল?
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখোপাধ্যায়েরা সিবিআই-ইডি’র কাছে বয়ানে জানিয়েছিলেন পুলিশ কী কী নথি বাজেয়াপ্ত করেছিল। পরবর্তীকালে সিটের কাছ থেকে মামলা সিবিআইয়ের হাতে আসে। সিবিআই দেখে সুদীপ্ত-দেবযানীর বয়ানমাফিক বহু নথি সিট তাদের হাতে তুলে দেয়নি। বিশেষ করে যে সব নথির সঙ্গে প্রভাবশালীদের যোগসূত্র রয়েছে, সেগুলি সিট সিবিআইকে দেয়নি বলে তদন্তকারীরা দাবি করেছেন। সিবিআই জানাচ্ছে, দিলীপ হাজরার বাড়িতে তল্লাশি সেই সূত্রেই। মাসখানেক ধরেই সিবিআই তাঁর খোঁজ করতে গিয়ে দেখে পুরনো টেলিফোন নম্বর, কলকাতার ঠিকানায় তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি বর্ধমানের বাড়িতেও তিনি ছিলেন না। মঙ্গলবার তল্লাশির সময়ে অবশ্য দিলীপবাবু বাড়িতে ছিলেন। অবসরের পর কোনও একটি বেসরকারি সংস্থায় যোগ দিয়েছেন তিনি। বর্ধমানের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কিছু নথি ও ‘মিসিং লিঙ্ক’ মিলেছে বলে সংস্থা সূত্রের দাবি। এর পরে সিটের অন্যান্য সদস্য এবং প্রভাবশালীদের নিয়েও তদন্ত শেষ পর্যায়ে দৌড়বে বলে সংস্থা সূত্রের দাবি।