অভিযুক্ত: সিবিআই অফিসে সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা ও টাইগার মির্জা। শুক্রবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
পুলিশ অফিসার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা আর মাদ্রাসা শিক্ষক সৈয়দ তাজদার মির্জা ওরফে টাইগারের মধ্যে মিল কোথায়? দু’জনেই নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত। ব্যক্তিগত জীবনে দু’জনে আবার সম্পর্কিত ভাই। পুলিশ মির্জাকে বৃহস্পতিবার প্রথম জেরা করেছিল সিবিআই, শিক্ষক মির্জাকে ইডি। শুক্রবার দুই ভাইকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই।
এ দিন সাত ঘণ্টা জেরার শেষে তদন্তকারীদের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, শাসক দলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী-সাংসদের হয়ে টাকা সংগ্রহ করতেন পুলিশকর্তা মির্জা। নারদের সম্পাদিত ভিডিও ফুটেজে যে তথ্য সামনে এসেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি জরুরি ছবি ও তথ্য পাওয়া গিয়েছে অসম্পাদিত ফুটেজে।
দুই মির্জার মুখোমুখি জেরায় এ দিন কী উঠে এসেছে? সিবিআইয়ের দাবি, দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা রাজ্যসভার এক সাংসদ তাঁর বাড়ির অফিসে বসে নারদকর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলকে বলেছিলেন বর্ধমানের তৎকালীন এসপি মির্জার কাছে টাকা পৌঁছে দিতে। চাওয়া টাকার একটি অংশ (পাঁচ লক্ষ) নেওয়ার সময় ম্যাথুকে মির্জা জানিয়েছিলেন, তিনি দাদা (সাংসদ)-র নির্দেশ অনুযায়ী টাকা জমা রাখেন।
তদন্তকারীদের দাবি, মির্জা তাঁর বর্ধমানের বাড়িতে বসে নারদকর্তার থেকে টাকা নেওয়ার সময় সেখানে আরও দু’জন ছিলেন। দু’জনেই ব্যবসায়ী। ওই সাংসদের নির্দেশ মতো তাঁরাও পুলিশ সুপারের হাতে টাকা তুলে দিতে এসেছিলেন। তার পরিমাণও প্রচুর। তদন্তকারীদের দাবি, ম্যাথুর তোলা ভিডিও ফুটেজের অসম্পাদিত অংশে এই ছবি উঠে এসেছে। এক সিবিআই কর্তা জানান, ওই দুই ব্যবসায়ীকে শনাক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁদেরও জেরা করা হবে। মির্জার ঘরেই ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ম্যাথুর পরিচয় হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ম্যাথুও তাঁদের কথা বলেছেন। ওই দুই ব্যবসায়ী এবং নারদকর্তা বর্ধমান থেকে একসঙ্গেই কলকাতায় ফেরেন।
জেরায় সিবিআই জানতে পেরেছে, কলকাতায় ইসমাইল নামে জনৈক ট্যাক্সি চালকের মারফৎ টাইগার মির্জার সঙ্গে ম্যাথুর পরিচয় হয়। তাঁর এবং পুলিশকর্তা মির্জার সহযোগিতায় দক্ষিণ কলকাতায় বসবাসকারী তৎকালীন এক মন্ত্রীর বাড়ি পৌঁছেছিলেন ম্যাথু। সাত সকালে মন্ত্রীকে ঘুম থেকে তুলে তাঁর বিছানায় টাকার বান্ডিল দিয়ে এসেছিলেন নারদকর্তা। সিবিআিই জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে দুই মির্জাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।