—প্রতীকী ছবি।
জাল নথি দিয়ে বৈধ ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করে বিদেশি গুপ্তচর সংস্থার গোয়েন্দারাও এ দেশে প্রবেশ করে থাকতে পারেন বলে অনুমান করছেন সিবিআই কর্তারা।
সপ্তাহ দুয়েক আগে গ্যাংটক, শিলিগুড়ি ও কলকাতা-সহ শহরতলির প্রায় ৫০টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। জাল পাসপোর্ট-কাণ্ডে ২৫ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। সেই ২৫ জনের মধ্যে ১৪ জনই কলকাতা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও কর্মী। এখনও পর্যন্ত কলকাতা অফিসের চার উচ্চপদস্থ অফিসার নিশীথ বরণ সাহা, দেবাশিস ভট্টাচার্য, উত্তম বহেরা ও মণীশ গুপ্ত-কেও গ্রেফতারও করা হয়েছে। তা ছাড়া গ্যাংটক আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের আধিকারিক গৌতম সাহা-সহ আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, এফআইআরে নাম থাকা ২৫ জনের বাড়িতেই তল্লাশি করা হয়েছে।
সিবিআইয়ের দাবি অনুযায়ী, বছর চারেক ধরে এই চক্রটি সক্রিয় ছিল। মূলত জাল নথি তৈরি করে অনুপ্রবেশকারীদের বৈধ পাসপোর্ট তৈরি করিয়ে দেওয়া হত। তদন্তকারীদের অনুমান, কয়েক হাজার জাল পাসপোর্ট তৈরি করে অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, জাল পাসপোর্ট তৈরির চক্রটিকে ব্যবহার করে একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠী ও গুপ্তচর সংস্থার সদস্যেরা এ দেশে ঘাঁটি গেড়ে থাকতে পারে এবং তারা জাল পাসপোর্ট নিয়ে এ দেশ থেকে বিদেশে নিয়মিত যাতায়াতও করে থাকতে পারে।
ওই তদন্তকারী অফিসারের দাবি, হেফাজতে নিয়ে অভিযুক্তদের জেরা করে এবং তাঁদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নথি যাচাই করে প্রাথমিক ভাবে জঙ্গি ও বিদেশি গুপ্তচরদের যোগের কথা উঠে এসেছে। সিবিআইয়ের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে তাদের মনে হয়েছে, চিন ও পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থার সদস্যদের জন্য এ ভাবে জাল নথির মাধ্যমে বৈধ পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। সেই পাসপোর্ট ব্যবহার করে তারা বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেছেন বলেও দাবি তদন্তকারীদের।
সিবিআই সূত্রের দাবি, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া জঙ্গি গোষ্ঠী সদস্যদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া পাসপোর্ট যাচাই করা হবে। পাশাপাশি কলকাতা, শিলিগুড়ি ও গ্যাংটকের আঞ্চলিক অফিস থেকে ওই সব পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। গত চার বছরে কলকাতা শিলিগুড়ি ও গ্যাংটক আঞ্চলিক অফিস থেকে কত পাসপোর্ট তৈরি হয়েছিল এবং পাসপোর্ট প্রার্থীদের সমস্ত নথি যাচাই করা হবে।