শুভাপ্রসন্ন।—ছবি সংগৃহীত।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি প্রভাব খাটিয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই সব ছবি বিক্রির তদন্তে নেমে সোমবার চিত্রকর শুভাপ্রসন্নকে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই।
মমতা-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ওই চিত্রকরকে এ দিন সকালে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে তিন ঘণ্টার বেশি প্রশ্ন করেন তদন্তকারীরা। অভিযোগ, অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের মতো অনেকেই চড়া দামে মমতার আঁকা বিভিন্ন ছবি কিনতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে শিল্পীর আঁকা ছবির কোনও নির্দিষ্ট বাজারদর হয় না বলে মনে করেন শিল্পীদেরই একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, কোনও ছবি দেখে পছন্দ হলে ক্রেতা যে-কোনও দামেই সেটি কিনে নিতে পারেন।
সিবিআই-কর্তারা অবশ্য এই যুক্তি মানতে রাজি নন। তাঁদের বক্তব্য, বিশ্ববরেণ্য চিত্রকরদের ছবি যে-দামে বিক্রি হয়, অন্যদের ক্ষেত্রে তা হওয়ার কথা নয়। অভিযোগ, ২০০৮-০৯, ২০১১ এবং ২০১২-১৩ সালে মমতার আঁকা ছবি নিয়ে যে-তিনটি প্রদর্শনী হয়েছিল, সেখানে এক-একটি ছবি তিন থেকে চার লক্ষ টাকাতেও বিক্রি হয়।
ওই সব প্রদর্শনী ছাড়াও অন্য সময়ে মমতার আঁকা ছবি যে বিভিন্ন শিল্পপতির কাছে বিক্রি করা হয়েছিল, তারও অনেক তথ্যপ্রমাণ তাদের কাছে আছে বলে সিবিআইয়ের দাবি। তারা জানাচ্ছে, সারদা-মালিকও প্রদর্শনীর বাইরে কয়েক লক্ষ টাকায় মমতার আঁকা দু’টি ছবি কিনেছিলেন।
সিবিআই সূত্রের খবর, প্রদর্শনীতে মমতার ছবির নামকরণ কী হবে, তার দাম কত হবে, শুভাপ্রসন্নই কয়েক বার তা ঠিক করে দিয়েছিলেন। সোমবার তাঁকে ডেকে তদন্তকারীরা সেই বিষয়েই জানতে চান। ওই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার বক্তব্য, অন্য লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির মালিকও চড়া দামে ছবি কেনেন এবং সেই বিষয়ে শুভাপ্রসন্ন অনেক তথ্য জানেন। এ দিন সেই সমস্ত বিষয়েও তাঁর কাছে কিছু তথ্যা জানতে চাওয়া হয়।
মমতার আঁকা ছবি কিনেছেন, এমন অনেক শিল্পপতিকে এর আগে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। অভিযোগ, মমতার আঁকা ছবি বিক্রি করে যে-টাকা পাওয়া গিয়েছিল, তার অধিকাংশই গিয়েছে শাসক দল তৃণমূলের মুখপত্রের তহবিলে। ছবি বিক্রির টাকা যখন দলীয় মুখপত্রের অ্যাকাউন্টে ঢুকছিল, সেই সময় ওই পত্রিকা এবং টাকা লেনদেনের সঙ্গে তৃণমূলের যে-সব নেতা জড়িত ছিলেন, একে একে তাঁদেরও ডাক পড়েছে সিবিআইয়ের দফতরে।