সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরোচ্ছেন সৃঞ্জয়। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল সাংসদ সৃঞ্জয় বসুর সংস্থা রিপ্লে অ্যান্ড কোম্পানির পণ্য খালাস ব্যবসা নিয়ে সোমবারও বন্দর কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার অমল দত্ত এবং ট্রাফিক ম্যানেজার স্বপন সাহারায়কে এ দিন নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠান কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার গোয়েন্দারা। বন্দরের দুই কর্তা এ দিন তদন্তকারী সংস্থার হাতে বিভিন্ন নথিপত্রও তুলে দেন।
মাত্র ৫৪০০ টাকা লাইসেন্স ফি দিয়ে নেওয়া অনুমতি পত্রের ভিত্তিতে রিপ্লে কী ভাবে বছরের পর বছর পণ্য খালাস করে গিয়েছে, তা নিয়ে তথ্য চেয়েছে সিবিআই। পাশাপাশি, এর ফলে বন্দরের ঠিক কত টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে, তারও হদিস পেতে চাইছে তারা। ১৯৮৭ সালে রিপ্লে যখন প্রথম পণ্য খালাসের লাইসেন্স পায়, তখনকার কোনও নথি এখনও খুঁজে পাননি বন্দরের বর্তমান কর্তারা। সেই কারণে তৎকালীন ট্রাফিক বিভাগের কর্তাদেরও জেরার জন্য ডাকা হতে পারে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, এখনকার বেশ কয়েক জন অফিসারকে ফের ডেকে তথ্য সংগ্রহ করা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে তদন্ত সংস্থাটি।
বন্দরের চেয়ারম্যান রাজপাল সিংহ কাহালোঁর কথায়, “সিবিআই প্রাথমিক তদন্ত করছে। তারা যে সহযোগিতা চাইবে, আমরা দেব। তদন্তে সাহায্যের জন্যই আমাদের কয়েক জন অফিসার ওদের অফিসে গিয়ে পণ্য খালাস ব্যবস্থা কী ভাবে চলে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন।”
বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ২০০০ সাল থেকে পণ্য খালাসের যাবতীয় নথি চেয়েছে সিবিআই। গত ১৫ বছরে তৃণমূল সাংসদের সংস্থা কত পরিমাণ পণ্য খালাস করেছে, সেই সময়ে অন্য সংস্থার পণ্য খালাসের পরিমাণ কত, বছরে পণ্য খালাস করে কত টাকা রোজগার হয়েছে, বাজার দরের চেয়ে এই টাকার পরিমাণ বেশি না কম, রাজনৈতিক নেতাদের কোনও ভূমিকা এই কারবারে ছিল কি না, থাকলে রিপ্লের থেকে তাঁরা কী রকম সুবিধা পেয়েছে-এমন প্রায় ১০০ প্রশ্ন বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে সিবিআই। সিবিআই সূত্র জানাচ্ছে, প্রাথামিক হিসেব অনুযায়ী, রিপ্লে সংস্থাটি গত ১৫ বছরে সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টন পণ্য খালাস করেছে। এ জন্য তাদের আয় হয়েছে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু বন্দর এক টাকাও রাজস্ব পায়নি। বর্তমান বাজারদরে হিসাব করলে, গত ১৫ বছরে বন্দর প্রায় ১০০০ কোটি টাকা লোকসান করেছে। পাশাপাশি রিপ্লে যে বাড়তি লাভ করেছে তার একটি বড় অংশ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কাছেও পৌঁছেছে বলে সিবিআই জেনেছে। তার পরিমাণ কত, তা-ও বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।