গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ওএমআর সংস্থার ধৃত কর্মী পার্থ সেনকে দুর্নীতির ‘মূল চাবিকাঠি’ বলে চিহ্নিত করল সিবিআই। সোমবার আলিপুর আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, ওএমআর শিটের মাধ্যমে যে দুর্নীতি হয়েছে, তাতে সরাসরি ভাবে যুক্ত এই পার্থ। তিনিই অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করেছিলেন। পরে সেই তালিকা পর্ষদ অফিসে পৌঁছয়। তালিকায় নাম থাকা বেশ কয়েক জনের চাকরিও হয়েছে বলে দাবি করেছে সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে খবর, এস এন বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি নিয়োগ প্রক্রিয়ার উত্তরপত্র মূল্যায়ন এবং ওএমআর শিট প্রস্তুত করার দায়িত্বে ছিল। সোমবার দুপুরে সেই সংস্থারই কর্মী পার্থকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাঁকে বিকেলে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। সেখানে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, ২০০৭ সাল থেকে ওএমআর শিট তৈরির ওই সংস্থায় চাকরি করছেন বছর তেষট্টির পার্থ। তাঁর মেয়ে এবং জামাই দু’জনেই প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক।
আদালতে সিবিআই দাবি করেছে, ২০১৭ সালে ৭৫২ জন অযোগ্য প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরি হয়েছিল ওএমআর সংস্থার অফিসে। সেই তালিকা তৈরি করেছিলেন পার্থই। তাঁর কাছে কিছু নাম এসেছিল। সেই নামগুলি থেকে একটি ‘ডিজিটালাইজ়ড’ তালিকা তৈরি হয়েছিল। পরে সেই তালিকা মেল করে পাঠানো হয় পর্ষদ অফিসে। সিবিআইয়ের দাবি, সেই ৭৫২ জনের ৩০০ জনের বেশি প্রার্থী পরে চাকরিও পেয়েছিলেন।
গত মাসেই ওএমআর সংস্থার দুই আধিকারিকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই। হাওড়ার দাশনগরে কৌশিক মাজি এবং সল্টলেকের সৌরভ মুখোপাধ্যায় নামে ওই দুই আধিকারিকের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। সেই সময় সিবিআই সূত্রে খবর মিলেছিল, তাঁদের বাড়ি থেকে কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক-সহ বহু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
এই মামলার তদন্তকারী হিসাবে সিবিআইয়ের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। টেটের ওএমআর শিট সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল তাঁর এজলাসে। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, ওএমআর শিটের ‘ডিজিটাইজড ডেটা’য় অনেক ভুল রয়েছে। আদালতে যে ওএমআর শিটের তথ্য বলে যে নথি পেশ করা হয়েছে, তা একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ, ওএমআর শিটের ডিজিটাইজড ডেটা বলতে যা বোঝায়, তা আসলে ওএমআর শিটের স্ক্যান করা কপি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পর্ষদ আদালতে যা পেশ করেছে, তা টাইপ করা তথ্য। আর সেই তথ্যে প্রশ্ন-উত্তরের অনেক বিকল্পেও ভুল রয়েছে।