মেয়র: নিজাম প্যালেসে শোভন চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার সকালেই নিজাম প্যালেসে ডেকে নেওয়া হয়েছিল কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এক পার্শ্বচরকে। সিবিআই জানিয়েছে, নারদ স্টিং অপারেশনের অসম্পাদিত ফুটেজে ম্যাথুর কাছ থেকে মেয়র টাকা নেওয়ার সময়ে পাশেই দেখা গিয়েছিল তাঁর ওই অনুগতকে।
অন্য দিকে নারদ কাণ্ডে ইডি প্রথম নোটিস জারি করার পরে এক প্রকাশ্য সভায় শোভন বলেছিলেন, ‘‘ম্যাথুর সঙ্গে আমার কী কথা হয়েছে তা ম্যাথুও জানে, আমিও জানি।’’ সেই ভিডিও ফুটেজটিও জোগাড় করেছিল সিবিআই। এই দুই ‘হাতিয়ার’-কে সামনে রেখে দু’দফায় শোভনকে সাত ঘণ্টা জেরা করল সিবিআই। জেরা পর্ব এ দিনের মতো শেষ হলেও সিবিআই আজ, শুক্রবার ফের শোভনকে হাজিরা দিতে বলেছে।
তদন্তকারীদের কথায়— সপ্তাহ খানেক আগে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদে শোভনবাবু জানিয়েছিলেন, ম্যাথু স্যামুয়েল নামে কাউকে তিনি চেনেন না। বহু লোক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। সব মানুষকে চেনা সম্ভব নয়। সিবিআইয়ের দাবি, তার পরেই ঘুঁটি সাজানো শুরু হয়েছিল। তদন্তকারীদের কথায়— নারদ ফুটেজে দেখা গিয়েছে, নিজের অফিসে মুখে সিগারেট নিয়ে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা তোয়ালেয় মুড়ে রাখছেন মেয়র। ওই সময় ঘরে ছিলেন শোভনবাবুর ওই পার্শ্বচরও।
এ দিন দু’দফায় মেয়রকে জেরা করা হয়। প্রথমে তিনি ম্যাথুর থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। কিন্তু পরে ওই পার্শ্বচর ও শোভনকে মুখোমুখি বসানো হয়। তখন মেয়র সহযোগিতা করেছেন বলে খবর। এক তদন্তকারীর বক্তব্য, শোভনকে ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরের আয়কর ও ব্যাঙ্কের নথি নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন তিনি পর্যাপ্ত নথি নিয়ে আসেননি। সপ্তাহখানেকের মধ্যে তাঁকে সব নথি জমা দিতে বলা হয়েছে।
সিবিআইয়ের দাবি, শোভনের বেহালার বাড়ি ও কলকাতা পুরসভার অফিসে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল। সেই সময় ম্যাথুর সঙ্গে শোভনের চার বার ফোনে কথা হয়েছিল। ম্যাথুর বয়ান অনুযায়ী, পুরসভার অফিসে বসে তিনি শোভনকে ৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি এক লক্ষ টাকা শোভনবাবুকে দেওয়ার জন্য ইকবাল আহমেদ নিয়েছিলেন বলে সিবিআইকে ম্যাথু জানিয়েছেন।