কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে দেওয়া মামলা নিয়ে পাল্টা জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হল। বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওই মামলা করা হয়েছে। পুলিশ সংক্রান্ত মামলার বিচার তিনি নিরপেক্ষ ভাবে করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মামলাকারী। হাই কোর্টে এখন গরমের ছুটি চলছে। বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতের অবকাশকালীন বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
গরমের ছুটির পর আগামী ১০ জুন থেকে আবার আদালত শুরু হবে। সাধারণত, কোনও ছুটির পর বিচারপতিদের ‘রস্টার’ পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ, তাঁরা এত দিন যে ধরনের মামলার বিচার করছিলেন, সেই বিষয় বদলে যায়। বিচারপতি সিংহ এত দিন হাই কোর্টে পঞ্চায়েত এবং পুরসভার বিভিন্ন মামলা শুনতেন। সম্প্রতি আদালতের ‘রস্টার’ বদলেছে। বিচারপতি সিংহকে দেওয়া হয়েছে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং অতি সক্রিয়তা সংক্রান্ত মামলাগুলি। ছুটির পর প্রথম দিন থেকেই আদালতে এই মামলার বিচার করার কথা তাঁর। কিন্তু সেই মামলাতেই বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে একটি পারিবারিক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিচারপতি সিংহের স্বামী তথা আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে-কে বার দুয়েক তলব করেছিল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। প্রতাপের অভিযোগ ছিল, জিজ্ঞাসাবাদের নামে পুলিশ তাঁকে হেনস্থা করেছে। কিছু দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলার নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। যে বিচারপতির স্বামী পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন, তাঁকে পুলিশের মামলার বিচার করতে দেওয়া হলে তিনি কতটা নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মামলাকারী।
উল্লেখ্য, কোনও বিচারপতির রায় পছন্দ না হলে তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা, এজলাসের সামনে ধর্না, এজলাস বয়কট, এমনকি, ওই এজলাস থেকে মামলা সরানোর জন্য প্রধান বিচারপতির এজলাসে আবেদন— সবই হয়েছে অতীতে। তবে কোনও বিচারপতির এজলাসে মামলা শুরুর আগেই তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন অনেকে।