প্রতীকী ছবি।
সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের দিক থেকে অনেক সময়েই সাহায্য মেলে না। ফলে ধাক্কা খায় তদন্ত। বিষয়টি গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। কিন্তু নিষ্পত্তি হয়নি। দিল্লির সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ছবিও সাইবার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষিতে বিষয়টি ফের তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বিতর্কিত ছবি ‘আপলোড’ করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক মাধ্যমগুলিকে প্রায়ই অভিযুক্ত হিসেবে খাড়া করেন অনেকে। কিন্তু পুলিশের অনেকে বলছেন, হানাহানিতে ‘উস্কানিমূলক’ ছবি ছড়ানো হলেও সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর ‘ইন্টারনেট প্রোটোকল (আইপি) অ্যাড্রেস’ অনেক সময়েই মেলে না। রাজ্য সরকারের সাইবার সংক্রান্ত মামলার বিশেষ কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বাদুড়িয়ার গোলমালের তদন্তের ক্ষেত্রেও এই সাহায্য মেলেনি। কোন ঘটনায় সাহায্য মিলবে আর কোনটায় মিলবে না, তা একান্ত ভাবেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির মর্জির উপরে নির্ভর করে।’’
কয়েক বছর আগে পারিবারিক গোলমালের জেরে সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের এক তরুণী। সেই ঘটনায় তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থার কাছ থেকে কোনও সাহায্য পায়নি। তার ফলে অভিযোগকারীকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশি সূত্রের খবর। এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার মামলা করেন ওই তরুণী। ২০১৭ সালের সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি এখনও। শুনানিতে বিভাসবাবু প্রশ্ন তুলেছিলেন, এ দেশে ব্যবসা করতে এসে সংস্থাগুলি দেশের আইন ও তদন্তকারী সংস্থাকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে কী ভাবে নিজেদের মর্জিমাফিক চলতে পারে? তিনি বলছেন, ‘‘ওই মামলায় সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থার কর্ণধারের পাশাপাশি কেন্দ্রকে যুক্ত করতে বলে আদালত। মাঝেমধ্যে বিচারপতি বদল-সহ কিছু কারণে তার শুনানি বিলম্বিত হয়েছে।’’
রাজ্য পুলিশের কর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, সমাজমাধ্যমর কাছ থেকে সাহায্য না-পেলেও ঘুরপথে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের বিভিন্ন গ্রুপের উপরে নজর রাখা হয়। ফোন নম্বরের সূত্র ধরে আগে গুজব ছড়ানোর ঘটনায় গ্রেফতারও হয়েছে। রাজ্য সিআইডি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপের কাছ থেকে সাহায্য পেলে ব্যাপারটা সহজ হত। ঘুরপথে অভিযুক্তদের ধরতে কালঘাম ছোটে। আইনি জটিলতাও থাকে।’’