প্রতীকী ছবি।
কোভিড চিকিৎসার খরচ নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি হাসপাতালগুলি যাতে পরামর্শ মেনে চলে সে জন্য সক্রিয় হল রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। শহরের একাধিক কর্পোরেট হাসপাতালে কমিশনের অ্যাডভাইজ়রি মেনে চিকিৎসা পরিষেবা সংক্রান্ত খরচের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি শুক্রবার খবরে প্রকাশিত হয়। যার প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে ছ’টি বেসরকারি হাসপাতালের বক্তব্য জানতে চাইল স্বাস্থ্য কমিশন।
এ দিন কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১৫ নম্বর অ্যাডভাইজ়রি মানা হচ্ছে না জানতে পেরে দ্বিতীয়বার স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করল কমিশন। এর আগে অন্য একটি ঘটনায় ডিসানের বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপ করা হয়েছিল। অভিযোগ সত্যি হলে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে দ্রুত ওই অ্যাডভাইজ়রি কার্যকর করতে হবে।’’
গত ২২ অগস্ট ১৫ নম্বর অ্যাডভাইজ়রির মাধ্যমে রাজ্যের সব ক’টি বেসরকারি হাসপাতালকে চিকিৎসা পরিষেবার প্রতিটি বিভাগে কত খরচ তা রোগীর পরিজনদের জানাতে হাসপাতাল চত্বরে ডিসপ্লে-বোর্ড টাঙানোর কথা বলা হয়েছিল। অ্যাডভাইজ়রির বক্তব্য ছিল, হাসপাতালের রিসেপশন, ক্যাশ কাউন্টার এবং ঢোকার মুখে সেই ডিসপ্লে-বোর্ড যেন রোগীর পরিজনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ২০১৭ সালের ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনেও সেই কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কমিশনের পর্যবেক্ষণ হল, বেসরকারি হাসপাতালগুলি সেই নির্দেশ ঠিকমতো অনুসরণ করছে না। ১৫ নম্বর অ্যাডভাইজ়রিতে তাই সেই পর্যবেক্ষণের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার অ্যাপোলো গ্লেনইগলস, আনন্দপুর ফর্টিস, রুবি, আমরি মুকুন্দপুর, সিএমআরআই এবং ডিসানে পনেরো নম্বর অ্যাডভাইজ়রি পুঙ্খানুপুঙ্খ মেনে চলার প্রশ্নে খামতি চোখে পড়ে। ওই ছ’টি হাসপাতালের কাছেই এদিন কমিশন ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের বক্তব্য জানানোর জন্য বলেছে। ঘটনাচক্রে, মেডিকা, আর এন টেগোরের ক্ষেত্রেও নতুন অ্যাডভাইজ়রিতে যেভাবে খরচের তালিকা রোগীর পরিজনদের জানাতে বলেছে তা দেখা যায়নি। মেডিকার রিসেপশন কাউন্টারে কর্তব্যরত এক কর্মীর জানান, এ ধরনের ডিসপ্লে বোর্ড নেই। খরচের তালিকা সম্পর্কে জানার জন্য তিনি অ্যাডমিশন কাউন্টারে পাঠিয়ে দেন। সেখানকার এক কর্মীর বক্তব্য ছিল, ‘‘রোগীকে ভর্তির সময় আনুমানিক খরচ কত তা বিলিং ডিপার্টমেন্ট কাউন্সেলিং করে দেবেন। রেট চার্ট আলাদা করে নেই।’’ যদিও হাসপাতালের কর্মীদের বক্তব্য ভিত্তিহীন বলে জানান মেডিকা কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, হাসপাতালের ঢোকার মুখ থেকে প্রতিটি টিভি মনিটরে খরচের তালিকা দেওয়া রয়েছে। আর এন টেগোরে এমার্জেন্সি ডেস্কের এক কর্মী বলেন, ‘‘খরচের তালিকা ডিসপ্লে কিছু করা নেই। বিলে তার উল্লেখ রয়েছে।’’
আর এন টেগোর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইন মেনে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পরিষেবার খরচ ডিজিটাল ডিসপ্লে-বোর্ডে দেওয়া রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, বোর্ড কোথায় রয়েছে, হাসপাতালের ফ্রন্টাল ডেস্কের কর্মীরা সেই খোঁজ দিতে পারেন না কেন? উত্তর পাওয়া যায়নি।