কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই হলিডে-হোমটিই বেদখলের অভিযোগ উঠেছে। ঝাড়খণ্ডের মধুপুরে। ছবি: অমরদীপ পাণ্ডে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুপুরের হলিডে হোমটি বেহাত হয়ে গিয়েছে বলে মাস ছয়েক আগে অভিযোগ উঠেছিল। এ বার সেই হলিডে হোমের আশপাশের বসবাসকারীরা সটান হাজির হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁদের অভিযোগ, হলিডে হোম সম্পূর্ণ দখল হয়ে গিয়েছে। সেখানে চলছে ‘বেআইনি’ কার্যকলাপ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, পঞ্চাশের দশকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের জন্য হলিডে হোমটি দান করেছিলেন প্রাক্তন রাজ্যপাল হরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ১৯৯০ সালে সেটি সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে হলিডে হোমটি বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ এবং তার দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মীকে ফিরিয়ে আনেন। এর পরে মধুপুর থেকে কয়েক জন এসে দাবি করেন, ওই সম্পত্তি তাঁদের। এ নিয়ে মামলা শুরু হয়।
গত শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের মধুপুর থেকে এক আত্মীয়কে নিয়ে এসেছিলেন অমরদীপ পাণ্ডে। ওই হলিডে হোমের পাশেই তাঁদের বাড়ি। হলিডে হোমটি জবরদখল হয়ে গিয়েছে এবং সেখানে ‘বেআইনি’ কার্যকলাপ চলছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। রবিবার অমরদীপ মধুপুর থেকে ফোনে বললেন, ‘‘আগে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সুরাহা হয়নি। এ বার তাই সশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বিষয়টা জানালাম।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পরিস্থিতি দেখতে মধুপুর যাওয়া হয়েছিল। তার পরে আর কিছু এগোয়নি।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, একাধিক বার বিষয়টি তাঁরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ কোনও কর্ণপাত করেননি। বিজেপি প্রভাবিত রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী পরিষদের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মী মন্মথ বিশ্বাস এ দিন বলেন, ‘‘এই হলিডে হোম তুলে দেওয়ার চক্রান্ত অনেক দিন ধরে চলছে কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। এই হলিডে হোম জবরদখলমুক্ত করে সেখানে কেয়ারটেকার-সহ অন্য কর্মীদের পাঠাতে হবে। হলিডে হোম আবার খুলে দিতে হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। আমরাও এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’ এ দিন রেজিস্ট্রার দেবাশিস দাস জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখছেন।