গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
জামাইকে ‘নিচু জাত’ বলে গালাগালি করার অভিযোগে শ্বশুরের বিরুদ্ধে তফসিলি জাতি-জনজাতি আইনে মামলা রুজু করে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। নিম্ন আদালতে শুরু হয়েছিল বিচারপ্রক্রিয়া। আদালতের সমন শ্বশুর উপেক্ষা করায় জারি হয় গ্রেফতারি পরোয়ানাও। তার বিরুদ্ধে অভিযুক্ত শ্বশুর কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট এই মামলায় হস্তক্ষেপের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে।
আদালত সূত্রের খবর, অভিযোগকারী জামাই উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল এলাকার বাসিন্দা। শ্বশুর ভিন্রাজ্যের। জামাইয়ের অভিযোগ, ২০১৯ সালে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। বিবাহ-পরবর্তী ধর্মীয় আচার পালনের জন্য ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর বধূর কাকিমা তাঁকে পঞ্জাবের বাড়িতে নিয়ে যান। ১০ দিন পরে স্ত্রীকে আনতে গেলে শ্বশুর তাঁকে শারীরিক হেনস্থা করেন এবং জাত তুলে গালাগালি দেন। শ্বশুর বলেন, ‘‘তোমার মতো নিচু জাতের মানুষের বাড়ি আমার মেয়ে যাবে না।’’
২০২০ সালের ৪ মার্চ আবার স্ত্রীকে ফেরত আনতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন জামাই। কিন্তু সে সময়ও তাঁকে শ্বশুর এবং তাঁর সঙ্গীরা শারীরিক নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ। এর পরে জগদ্দল থানায় শ্বশুরের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিলেন জামাই। তদন্তের পর পুলিশ ২০২২ সালের ১৮ মে বারাসত আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল। একাধিক বার সমন জারির পরেও শ্বশুর হাজিরা না দেওয়ায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বারাসত আদালত।
এর পরেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত শ্বশুর। তাঁর দাবি, জামাই মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। হাই কোর্টে এফআইআর বাতিলের আর্জি জানান তিনি। পুলিশ সঠিক তদন্ত না করেই বারাসত আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে বলেও হাই কোর্টে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার শ্বশুরের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি অজয়কুমার মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ। বিচারপতি জানান, পুলিশ তফসিলি জাতি-জনজাতি আইনে চার্জশিট দিয়েছে। হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবে না। নিম্ন আদালতের নির্দেশ মেনে বিচার প্রক্রিয়ায় শামিল হওয়ার জন্যও শ্বশুরকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।