হবু ডাক্তারদের অনশন তুলতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। নিজস্ব চিত্র
আদালত বার বার অনুরোধ করলেও আর জি করের হবু ডাক্তাররা অনশন বন্ধ করতে রাজি হলেন না। তাঁরা জানিয়ে দিলেন, ২৯ অক্টোবর স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে পর্যন্ত তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। তাঁদের যুক্তি, এতে কর্তৃপক্ষের উপর চাপ বজায় রাখা যাবে।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের হবু ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সোমবার মামলাটির শুনানিতে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের দাবি দাওয়া জেনে তা মেনেও নেয় আদালত। তবে তার পাশাপাশি আন্দোলনকারী ইন্টার্নদের প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বোঝাতেও দেখা যায় আদালতের দুই বিচারপতিকে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি ছিল। হবু ডাক্তারদের তরফে হাজির ছিলেন তিনজন প্রতিনিধি। এর মধ্যে একজন অনশনকারীও ছিলেন।
বিচারপতিরা আন্দোলনকারীদের স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করার দাবি মেনে বলেন, ‘‘এ বার আপনারা অনশন বন্ধ করুন। স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকের পরও যদি কোনও সমস্যা থাকে, তবে আবার আদালতে আসবেন।’’ এমনকি পড়ুয়াদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ভাবে চালিয়ে যেতে বলে আদালত বলে, ‘‘আন্দোলন ছাত্রদের অধিকার। তবে অনশন চালাবেন কেন?’’ বিচারপতি বসাক বলেন, ‘‘আপনাদের দাবি মানা হয়েছে এ বার অনশনটা বন্ধ করুন। আন্দোলনের একাধিক পদ্ধতি রয়েছে অযথা অনশন করবেন কেন?’’ তবে বিচারপতির এই আর্জির পরও কোনও সুরাহা হয়নি। অনশন চলবে বলে জানিয়ে দেন পড়ুয়ারা। অনশনরত পড়ুয়া দেবলীনা বসু বলেন, আমরা ২৯ তারিখ অবধি অনশন চালিয়ে যেতে চাই। অনশন থাকলে চাপ তৈরি হবে।’’
সোমবার একরকম নজিরবিহীন ভাবেই অনশনরত পড়ুয়াদের বোঝাতে দেখা যায় আদালতকে। কিন্তু তাতেও হবু চিকিৎসকদের মনোভাব না বদলানোয় বিচারপতি সামন্ত বলেন, ‘‘আদালত স্বাস্থ্যসচিবকে নির্দেশ দিচ্ছে আপনাদের সঙ্গে কথা বলার। এটা উচ্চ আদালত। এই নির্দেশ মানতে বাধ্য। তার পরও আপনাদের চাপ তৈরি করা প্রয়োজন হবে?’’ আন্দোলনরত হবু ডাক্তারদের আদালতের অনুরোধ মেনে নিতে আলাদা করে অনুরোধও করা হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁরা জানিয়ে দেন, আগামী ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত অনশন চালিয়েই যাবেন। শেষমেশ বিচারপতিরা বলেন, ‘‘আরও যাঁরা অনশন করছেন তাঁদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলুন। আমাদের পরামর্শ তাঁদের বোঝান। তার পর মনে হলে মেনে চলুন।’’