—ফাইল চিত্র
করোনার হানাদারির জন্য, এমনকি লকডাউনের পরেও কলকাতা হাইকোর্টের স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ ছিল। গোড়ার দিকে শুনানি চলছিল পুরোপুরি ভিডিয়ো মাধ্যমে। পরের দিকে কিছু মামলায় আইনজীবীরা সশরীরে এজলাসে হাজির হচ্ছিলেন। অবশেষে নতুন বছরের গোড়াতেই, আজ, সোমবার থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে উচ্চ আদালত। এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার জেনারেলের অফিস থেকে আগেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ হবে বলে ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। জানানো হয়েছে, কী কী মেনে চলতে হবে। চলতি সপ্তাহে কিছু নিম্ন আদালতও খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আইনজীবী শিবিরের খবর।
ছন্দে ফেরার খবরে হাইকোর্ট পাড়া খুশি। দ্রুত বিচারের আশা দেখছেন মামলাকারীরাও। কৌঁসুলিরা জানান, ভিডিয়োয় শুনানি চালু করে বেশ কিছু মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়েছে। বেশির ভাগই ফৌজদারি, জনস্বার্থ ও চাকরি সংক্রান্ত মামলা। কোভিড আবহেই দুর্গা-কালীপুজোয় নিয়ন্ত্রণ, বাজি নিষিদ্ধ করার মতো দৃষ্টান্তমূলক রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। স্কুল সার্ভিস কমিশনের উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ, স্কুল ফি মামলারও রায় বেরিয়েছে।
ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ডেটা গ্রিডের তথ্য অনুযায়ী, হাইকোর্টে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মিলিয়ে ২,৬৭,৪৫৩টি মামলা বকেয়া রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ২,২৫,০০০টিই দেওয়ানি মামলা। কোর্ট স্বাভাবিক ছন্দে কাজ করলে সেগুলিরও নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। “প্রচুর মামলা জমে রয়েছে। আশা করছি, সেগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি হবে,’’ বলেন আইনজীবী নীলাদ্রিশেখর ঘোষ। আইনজীবী অরিন্দম জানার কথায়, “নতুন বছরে আশা করছি সব ভাল ভাবেই চলবে।”
অনেকেই জানাচ্ছেন, বিভিন্ন নিম্ন আদালতেও প্রচুর মামলা জমেছে। ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ডেটা গ্রিড জানাচ্ছে, বঙ্গের সব নিম্ন আদালত মিলিয়ে ২৩,৮৯,৫৩১ মামলা বকেয়া। তার মধ্যে ১৮ লক্ষেরও বেশি ফৌজদারি। হাইকোর্টে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালু হওয়ার পরে নিম্ন আদালতেও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির উপরে জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন অনেকে। “হাইকোর্ট, নিম্ন আদালত— সর্বত্রই বহু মামলা জমে আছে। কোভিড পরিস্থিতিতেও প্রচুর হয়েছে। আশা করছি, আদালত সেই মামলাগুলিরও দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য যথাযথ ভাবে উদ্যোগী হবে,” বলেন আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা।