গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের আবেদন গ্রহণ করল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে পদক্ষেপ করার বিষয়টি এখনই স্পষ্ট করল না আদালত।
এসএসসি মামলার রায় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি আদালত নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন মমতা, সে বিষয়েই বৃহস্পতিবার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। দুপুর ২টো থেকে সেই মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে। বেঞ্চ জানায়, আবেদন গ্রহণ করা হলেও পদক্ষেপের বিষয়টি আপাতত তারা বিবেচনাধীন রাখছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই একই বিষয়ে মোট পাঁচটি আবেদন জমা পড়েছিল হাই কোর্টে। প্রধান বিচারপতি শুনানির পর বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ হবে কি না, তা বিবেচনাধীন রাখা হচ্ছে। তবে আবেদনটি গ্রহণ করা হল।’’ একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, আদালত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে কি না, তা ঠিক করবে একটি বেঞ্চ। ফলে আপাতত ওই বেঞ্চের সিদ্ধান্তের উপরেই নির্ভর করছে এই মামলার ভবিষ্যৎ।
সোমবার এসএসসি মামলার রায় ঘোষণার পর আদালতের নির্দেশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কিছু মন্তব্য করেছিলেন মমতা। তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বর্ধমানের গলসির জনসভায় বিজেপি সম্পর্কে মমতা বলেন, ‘‘এরা কোর্ট কিনে নিয়েছে, আমি সুপ্রিম কোর্টের কথা বলছি না। সিবিআই-কে কিনে নিয়েছে, বিএসএফ-কে কিনে নিয়েছে!’’ তবে এই সূত্রেই তিনি জানান, বিচারপতিদের সম্পর্কে কিছু বলছেন না।
মমতার ওই মন্তব্যেই আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বৃহস্পতিবার বিকাশ আদালতে বলেন, ‘‘অপরাধমূলক মন্তব্য করা হচ্ছে। পদক্ষেপ করা না হলে সবাই আদালতকে দেখে হাসাহাসি করবে।’’ একই সঙ্গে তিনি সওয়াল করেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আদালত বিক্রি হয়ে গিয়েছে। বিচারপতির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বিচারপতিরা নিজের বিচারবুদ্ধি দিয়ে কাজ করেন। কিন্তু গোটা হাই কোর্ট বিক্রি হয়ে গিয়েছে, এমন মন্তব্য কেন? এতে আদালতের সম্মানহানি হচ্ছে।’’
(আনন্দবাজার অনলাইন দেশের সমস্ত বিচারালয়, বিচারপতি এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই খবরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে, তা তাঁর নিজস্ব অভিমত। তার দায় আনন্দবাজার অনলাইনের নয়)