কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার। আচমকা জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করা যায় না। বিজেপি বিধায়কদের করা মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল কলকাতা হাই কোর্ট। জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননার অভিযোগ তুলে ১১ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল লালবাজারে। তাকে চ্যালেঞ্জ করেই উচ্চ আদালতে যান বিধায়কেরা।
হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা বিষয়ক এই মামলাটি চলছে। শুনানি চলাকালীন বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘হঠাৎ করে জাতীয় সঙ্গীত শুরু করা যায় না। এখানে যদি এখন কেউ জাতীয় সঙ্গীত গাইতে শুরু করেন, তা হলে তো সব কাজ বন্ধ করে সবাইকে দাঁড়িয়ে পড়তে হবে। এমনটা করা যায় নাকি! অবশ্যই জাতীয় সঙ্গীতের জন্য একটা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা উচিত।’’
ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার বিধানসভায়। সেখানে তৃণমূলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেন শাসকদলের মন্ত্রী, বিধায়কেরা। ওই একই সময়ে তৃণমূলের বিক্ষোভস্থল থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে বিধানসভার সিঁড়িতে বসে পাল্টা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। তুলছিলেন সরকার-বিরোধী স্লোগান। তৃণমূল বিধায়কেরা জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময়েও বিজেপি শিবির থেকে স্লোগান শোনা যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। তৃণমূলের তরফে ১২ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে বিধানসভার স্পিকারের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা পড়ে। ওই ১২ জনের তালিকায় বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের নামও ছিল। পরে সেই নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এই ১১ জন বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র লালবাজারে পাঠিয়ে দেন স্পিকার। সেখান থেকে বিধায়কদের নোটিস পাঠিয়ে তলব করে কলকাতা পুলিশ। সোমবার লালবাজারে তাঁদের হাজিরা দেওয়ার কথা। তার আগে এফআইআরটিকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি বিধায়কেরা।
শুনানিতে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এমন নয় যে, যখন তৃণমূল বিধায়ক, মন্ত্রীরা জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া শুরু করেন, তখন থেকে বিজেপি বিধায়কেরাও স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাঁরা বিধানসভায় আগে থেকেই স্লোগান দিচ্ছিলেন। ফলে জাতীয় সঙ্গীতের জন্য নিয়ম মানা দরকার। দুপুর ২টোয় আবার মামলাটির শুনানি শুরু হবে।