পুজোর অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ রানাঘাটের পুজো কমিটি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছে নদিয়ার রানাঘাটের একটি পুজো কমিটি। কিন্তু তাতে পুলিশ অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়ে শুক্রবার মামলা হল কলকাতা হাই কোর্টে। বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হবে।
রানাঘাটের কামালপুর এলাকার অভিযান সঙ্ঘ এ বছর ১১২ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, বাংলায় এত বড় দুর্গাপ্রতিমা এর আগে কখনও কোনও ক্লাবে হয়নি। পুজো আয়োজনের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু অভিযোগ, স্থানীয় পুলিশ এই পুজোর অনুমতি দিচ্ছে না। অনুমতি চেয়ে তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন উদ্যোক্তারা।
আদালতে মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘‘এত বড় দুর্গা বাংলার কোথাও আগে তৈরি হয়নি। এই পুজো হলে নতুন নজির গড়তে পারবে রানাঘাটের পুজো কমিটি।’’ পুলিশের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবং পুজোর অনুমতি চেয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল শুক্রবার। আদালত মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে।
পুলিশের যুক্তি, রানাঘাটের ওই পুজোয় ১১২ ফুটের দুর্গা দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় করবেন। সে ক্ষেত্রে পদপিষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাই এই ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। পুজোর অনুমতি তাই দেওয়া হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের তরফে ২০১৫ সালে কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের পুজোর দৃষ্টান্তও উল্লেখ করা হয়েছে। সে বার দেশপ্রিয় পার্ক ৮৮ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করেছিল। প্রবল ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছিল প্রশাসন। ভিড়ের চাপে প্রতিমা দর্শন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে অসমের গুয়াহাটিতেও ১০০ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরি হয়েছিল। তবে উদ্বোধনের আগে তা ভেঙে যায়।
রানাঘাটের এই পুজোর জন্য এক বছর ধরে প্রস্তুতি চলছে, জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে নববর্ষের পর থেকে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বড় প্রতিমার যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা মাথায় রেখেই তাঁরা আয়োজন করেছেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না মিললে শেষ মুহূর্তে সমস্ত আয়োজন ভেস্তে যেতে পারে। সেই কারণেই তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।