পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলে দুর্নীতি এবং অব্যবস্থার অভিযোগে মামলা কলকাতা হাই কোর্টে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তীকে সরিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। অবসরের পর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও তিনি পদে রয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই রেজিস্ট্রারকে পদ ছাড়তে হবে। ৩১ জানুয়ারি, শুক্রবার বিকেল ৫টার মধ্যে তিনি পদত্যাগ না-করলে পদ থেকে তাঁকে অপসারণ করা হবে। রাজ্য সরকারের অনুমোদন ছাড়া কী ভাবে তিনি এত বছর পদে থেকে গেলেন, প্রশ্ন তুলেছে উচ্চ আদালত।
পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদে মানসের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর। কিন্তু তার পরেও তিনি পদত্যাগ করেননি বলে অভিযোগ। বেঙ্গল মেডিক্যাল অ্যাক্ট অনুযায়ী, সময়সীমা উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও পদে থাকতে গেলে রাজ্য সরকারের আগাম অনুমোদন দরকার হয়। এ ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। অর্থাৎ, রাজ্যের অনুমোদন ছাড়াই মানস পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করেছেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এটি বেআইনি।
মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদে মানসের দায়িত্বকে চ্যালেঞ্জ করে এবং কাউন্সিলে দুর্নীতি ও অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে সম্প্রতি হাই কোর্টে মামলা করা হয়েছিল। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি মেডিক্যাল কাউন্সিলে নিয়োগের পরীক্ষা রয়েছে। তার আগে কী ভাবে পদে মানস? প্রশ্ন তুলেছিলেন মামলাকারী। অভিযোগ, হাই কোর্টের একাধিক নির্দেশ সত্ত্বেও কাউন্সিলে স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। বেআইনি ভাবে পদ ধরে রেখেছেন রেজিস্ট্রার। সেই মামলাতেই মানসকে সরিয়ে দেওয়া হল।
প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘সরকারের থেকে মেডিক্যাল কাউন্সিল বড় নয়। কাউন্সিলের সদস্যেরা মহান পেশায় রয়েছেন। তাই তাঁদের মহান ভাবেই কাজ করা উচিত। ছ’হাজার টাকায় পশ্চিমবঙ্গে কর্মীদের কাজ করানো হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মাসে পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন রেজিস্ট্রারকে নিয়োগ করা হবে।’’
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের তৎপরতা চোখে পড়ে। আরজি কর পর্বে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ আসফাকুল্লা নাইয়াকে সম্প্রতি শো কজ় করেছে মেডিক্যাল কাউন্সিল। আর এক প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তার কিঞ্জল নন্দের বিষয়ে তথ্য চেয়ে আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছে তারা।