কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
চাকরি, খাদ্য, বাসস্থান ছাড়া মানুষ মরছে রোজ। আর কেউ মরছেন, ভোটে লড়তে চান বলে। পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত একটি মামলায় প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণের সময় মঙ্গলবার মানুষের সঙ্কটের কথা মনে করিয়ে দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্ত নির্ধারিত শুনানির প্রায় শেষ পথে ছিলেন। তখন এক আইনজীবী পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত একটি মামলার বিষয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। দ্রুত শুনানির আবেদন জানান তিনি। হাই কোর্টের তরফে জানানো হয়, বুধবারই মামলাটি শোনার কথা রয়েছে। তবে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম সংশয় প্রকাশ করে জানান, মামলাটি শেষ পর্যন্ত বুধবারই শোনা হবে কি না, তিনি জানেন না। ওই আইনজীবী যদিও তার পরেও মামলাটির দ্রুত শুনানির আবেদন করে যেতে থাকেন। তার পরের কথোপকথন এ রকম:
প্রধান বিচারপতি: প্রত্যেক দিন সকালে এটা একটা বিষয়। যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তাঁদের কী হবে? এক দিন এসে তাঁদের জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখুন। সোমবার ৬৫টি স্লিপ গ্রহণ করা হয়েছে।
আইনজীবী: আমরা অপারগ। মানুষ মারা যাচ্ছেন।
প্রধান বিচারপতি: কী করা যাবে? আপনারা মরছেন, কারণ আপনারা নির্বাচনে লড়তে চান। এদিকে মানুষ চাকরি, খাবার, আশ্রয়ের অভাবে মারা যাচ্ছেন।
আইনজীবী: হুজুর, খাদ্য, আশ্রয় নিশ্চিত করার জন্য পাঁচ বছর অন্তর এটাই এক মাত্র ওষুধ।
প্রধান বিচারপতি: আপনি নির্বাচনের বিলাসিতা উপভোগ করতে চান। আর অন্য মানুষটা প্রাথমিক প্রয়োজনের জন্য মরছে।
আইনজীবী যদিও তার পরেও অনুরোধ করে যেতে থাকেন প্রধান বিচারপতিকে। জানান, বুধবার যে কোনও সময় শোনা হোক সেই মামলা।
প্রধান বিচারপতি: সমস্যার সমাধান হবে না। যদি বলি কাল শুনব, আপনি বলবেন, কোন সময়? আপনি তখন সময় জানানোর জন্য চাপ দেবেন।
এর পরেই আইনজীবী চাপ দিতে থাকলে বিচারপতি জানান, বিষয়টি অন্য কোথাও নিয়ে যেতে পারেন তিনি। আইনজীবী বাধ্য হয়েই জানান, এই নিয়ে আর বিরক্ত করবেন না বিচারপতিকে।