বই চুরির ঘটনায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চাইল আদালত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
চুরি যাওয়া কত পাঠ্যবই উদ্ধার হয়েছে, রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানি হয়। ডিভিশন বেঞ্চ তখন রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করে, চুরি যাওয়া কত বই উদ্ধার সম্ভব হয়েছে? কত ছাত্রছাত্রী বই পায়নি? তাদের পড়াশোনার জন্য কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? এর পরই জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
২০২২ সালে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর স্কুল এসআইয়ের অফিস থেকে ২ লক্ষ পাঠ্যবই চুরির অভিযোগ ওঠে। ওই বই চুরির তদন্ত পুলিশ সঠিক ভাবে করছে না, এই অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মামলাকারীরা সিবিআই তদন্তের আবেদন জানান। বৃহস্পতিবার শুনানিতে রাজ্যকে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, কয়েকটা বই তো নয় যে সাইকেলে করে চুরি হয়ে যাবে, ২ লক্ষ বই কী ভাবে একটি অফিস থেকে চুরি হয়ে গেল? উত্তরে রাজ্য জানায়, দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নভেম্বর মাসে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। অনেক বই উদ্ধার হয়েছে।
রাজ্যের জবাব শুনে প্রধান বিচারপতি আবার প্রশ্ন করেন, অভিযুক্তেরা যদি ধরা পড়েন, তবে এখনও কেন বই উদ্ধার করা গেল না? দু’বছরের মধ্যেও বই উদ্ধার হল না? আর কত সময় লাগবে? এর পরই আদালত জানায়, যে হেতু চার্জশিট পেশ হয়েছে, এই অবস্থায় হাই কোর্ট পদক্ষেপ করলে বিচার প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব পড়বে। তাই আদালত তদন্ত নিয়ে আপাতত কিছু বলবে না। তবে তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে।
চুরি যাওয়া বইয়ের মূল্য আনুমানিক তিন কোটি টাকা। স্কুলপড়ুয়াদের জন্য ওই সব বই রাজ্যের শিক্ষা দফতর থেকে জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে যায়। সেখান থেকে বইগুলি এসআই অফিসে পাঠানো হয়। জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলি সেই অফিস থেকে বই সংগ্রহ করে। তার পর তা বিনামূল্যে পড়ুয়াদের মধ্যে বিলি করা হয়। সেই বই এসআই অফিস থেকে চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। হাই কোর্টে গ্রামবাসীদের আবেদন, ঘটনার তদন্ত সিবিআই, সিআইডির মতো কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে করানো হোক। সেই আবেদন গৃহীত হয়।