হাওড়ার ধৃত যুবককে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। —ফাইল চিত্র
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকের লাইভ সম্প্রচারের সময় ফেসবুকের কমেন্ট বক্সে ‘তির্যক মন্তব্য’ করার অভিযোগে ধৃত হাওড়ার যুবককে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এক জন নাগরিকের বাক্স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে পুলিশ। এর প্রেক্ষিতেই ধৃতকে বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
আদালত সূত্রে খবর, লাইভ সম্প্রচারের সময় টিভিতে এসএমএস করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় ও শাসকদলের স্থানীয় এক নেতার বিরুদ্ধে জলাজমি ভরাটে মদতের অভিযোগে এরশাদ সুলতান ওরফে শাহিন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল হাওড়ার শিবপুর থানার পুলিশ। সেই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে মঙ্গলবার হাই কোর্টে মামলা দায়েরের অনুমতি চেয়েছিল ধৃতের পরিবার। বিচারপতি সিংহ অনুমতি দিয়েছিলেন। বুধবার ওই মামলায় পুলিশকে কড়া ভাষায় বিঁধেছেন বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে কেউ কোনও অভিযোগ করলে বা ক্ষোভ জানালে, তাঁকে গ্রেফতার করা হবে? যাঁর বিরুদ্ধে বলেছেন, সেই অরূপ রায় কি অভিযোগ করেছেন? এই ঘটনায় পুলিশ নাক গলিয়েছে। এর মধ্যে তাদের ঢোকার কথা নয়। এক্তিয়ারও ছিল না। দু’জনের মধ্যে গোলমাল বা কাদা ছোড়াছুড়ি হল, আর তৃতীয় ব্যক্তি অভিযোগ জানানোয় এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিল? এটা আইন?’’
কবে কোথা থেকে শাহিনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তা-ও জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি। তার জবাবে রাজ্যের আইনজীবী জানান, গত ৩০ জুন বাড়ি থেকে শাহিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তিনি হাজির না হওয়ায় দু’দিন পরে তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
রাজ্যের বক্তব্য শোনার পরে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, গত ৩০ জুন তারিখে শিবপুর থানার সারা দিনের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি জানান, রাজ্য দাবি করছে, শাহিনকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও ধৃতের পরিবার অভিযোগ করেছে, শাহিন নোটিস পেয়ে থানায় গেলে তাঁকে দীর্ঘ ক্ষণ আটকে রাখা হয়েছিল। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।