স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে স্ত্রীধন থেকে বঞ্চিত করা গার্হস্থ হিংসার নামান্তর। ফাইল ছবি।
স্ত্রীকে স্ত্রীধন অথবা অন্য কোনও অর্থনৈতিক সম্পদ থেকে বঞ্চিত করাকে গার্হস্থ হিংসা হিসাবেই গ্রাহ্য হবে। এই সংক্রান্ত একটি মামলার প্রেক্ষিতে জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
প্রসঙ্গত, স্ত্রীধন হল সেই সামগ্রী যা স্বেচ্ছায় মেয়ের বাড়ির লোকেরা বিয়েতে তাঁকে উপহার হিসাবে দিয়ে থাকেন। হাই কোর্টের একক বেঞ্চের বিচারপতি শুভেন্দু সামন্ত বলেন, ‘‘কোনও আর্থিক বা অর্থনৈতিক সম্পদ থেকে মামলাকারীকে বঞ্চিত করা গার্হস্থ হিংসা হিসাবেই বিবেচিত হবে। এ ক্ষেত্রে এটা সত্য যে আবেদনকারীকে তাঁর স্ত্রীধন থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। যা অপর পক্ষের হেফাজতে ছিল। এই বাস্তব পরিস্থিতিতে স্ত্রীধন নিজেদের কাছে আটকে রাখাও গার্হস্থ হিংসার আওতায় পড়ে।’’
পাশাপাশি বিচারপতি শুভেন্দু সামন্ত এই মামলায় হাওড়ার এক নিম্ন আদালতের রায়ও খারিজ করে দিয়েছেন। সেই রায়ে হাওড়ার নিম্ন আদালত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায় খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছিল, বিধবাকে শ্বশুর ও শাশুড়ির তরফ থেকে কোনও ধরনের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন নেই।
প্রসঙ্গত, হাওড়া আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই হাই কোর্টে আসেন ওই মহিলা। ২০১০-য়ে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। স্বামীর মৃত্যুর দু’দিন পরই তাঁকে স্বামীর বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়। দেওয়া হয়নি কোনও আর্থিক সহায়তাও। ফিরে পাননি স্ত্রীধনও। এই প্রেক্ষিতে তিনি মামলা করেন আদালতে। নিম্ন আদালত হয়ে সেই মামলাই পৌঁছয় হাই কোর্টে। সেখানে হাই কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে আর্থিক সহায়তা বা স্ত্রীধন থেকে বঞ্চিত করলে তা গার্হস্থ হিংসা হিসাবেই বিবেচিত হবে।