বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ মামলায় দেওয়া তাঁর আরও একটি নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। কলকাতায় নিজের এজলাসে বসে সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে একরকম হতাশই শোনাল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। নির্দেশে প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘‘আমার হাত আবার যদি বেঁধে দেওয়া হয়, আমি তো কিছু করতে পারব না। বড়জোর সুপ্রিম কোর্টকে কিছু অনুরোধ করতে পারি।’’
দিন কয়েক আগেই নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষাপর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। সিবিআইকে ওই নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি বলেছিলেন, মানিকের বিরুদ্ধে নতুন করে এফআইআর করে তদন্ত করবে সিবিআই। আর্থিক অনিয়ম খুঁজবে ইডি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্ট গিয়েছিলেন মানিক। গত সপ্তাহে শীর্ষ আদালত এর মধ্যে একটি নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। মূল মামলeকারীর আইনজীবী দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় জানান, মানিককে জিজ্ঞাসাবাদের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেই বৃহস্পতিবার এ নিয়ে মন্তব্য করলেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “যাঁরা ঘুষ দিয়ে চাকরি করছেন, তাঁরা স্বীকার করার পরেও কী ভাবে এই মামলায় স্থগিতাদেশ হয় বুঝতে পারি না!”
স্কুলের শিক্ষক পোস্টিং দুর্নীতির মামলাতেই মানিককে জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেছিলেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে বিচারপতির মন্তব্য শুনে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেছেন ন্যাচারাল জাস্টিসের দোহাই দিয়ে কোনও মামলার বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত না করাই উচিত।”
অন্য এক আইনজীবী বলেন, “ধর্মাবতার আপনি যা করে দিয়েছেন তাতে অনেকের ঘুম উড়ে গিয়েছে। আমার মামলায় আপনার নির্দেশের পরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রাতে ঘুমাতে পারছেন না।”
এর জবাবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “নাগরিকদের সঙ্গে কেউ দুষ্টুমি করবেন তা আমি সহ্য করব না। কেন সাধারণ মানুষকে কোর্টে দৌড়ে আসতে হবে? কেন সরকারি আধিকারিকেরা নিজের কাজ করেন না? এটা আমার পছন্দ নয়।” তাঁর মন্তব্য, “আমার নির্দেশে কেউ যদি ঘুমাতে না পারেন তা হলে বলব হাই কোর্টের গরিমা অক্ষুণ্ণ রয়েছে। এখনও হাই কোর্টের নির্দেশকে ভয় পান।”