—প্রতীকী ছবি।
উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধ রেখেছে রাজ্য। কিন্তু ওই যুক্তি দেখিয়ে যে বদলির আবেদন আটকে রাখা যাবে না, তা কার্যত স্পষ্ট করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার এক প্রাথমিক শিক্ষিকার দায়ের করা মামলায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছেন যে, মামলাকারীর আবেদন অফলাইনে বিবেচনা করে দেখতে হবে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধ বলে বদলির আবেদন করা যাবে না, এই যুক্তি আর চলবে না। এ বার থেকে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির আবেদন অফলাইনে বিবেচনা করা উচিত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের।
আদালতের খবর, মামলাকারী প্রাথমিক শিক্ষিকা উত্তর দিনাজপুরের একটি স্কুলে কর্মরত। তিনি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। তাঁর শিশুকন্যার শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি বীরভূমে নিজের বাড়ির কাছাকাছি বদলির আর্জি জানালেও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কোনও সদুত্তর দেয়নি। পর্ষদ সূত্রের দাবি, শিক্ষা দফতর উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধ রাখায় বদলি প্রক্রিয়া স্থগিত আছে। সে কথা কোর্টেও জানানো হয়। তবে উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধ বলে কোনও বদলির আবেদন করা যাবে না, এই যুক্তি কোর্ট মানতে চায়নি। এ ব্যাপারে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “নির্দেশের প্রতিলিপি দেখে বলতে পারব। তবে আমার মনে হয়, দফতরের হাতে থাকার থেকে প্রকাশ্যে স্বচ্ছ ভাবে বদলি হওয়াই ভাল।’’
আইনজীবীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধ রাখার ফলে বহু ক্ষেত্রেই বদলির আবেদন পড়ে থাকছে। এর মধ্যেও কয়েক জন কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ‘মিউচুয়াল’ অথবা বিশেষ কোনও ক্ষেত্রে বদলির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। এ দিন হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থা যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতে আগামী দিনে উৎসশ্রী পোর্টাল বন্ধ থাকলেও বদলির ক্ষেত্রে সমস্যা কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এ দিনের নির্দেশকে সামনে রেখে আরও অনেকেই কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারবেন।
আইনজীবীদের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের বহু শিক্ষককে বছর খানেক আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বদলি করেছিল শিক্ষা দফতর।
পড়ুয়া-শিক্ষক অনুপাতে ‘উদ্বৃত্ত’ হিসেবে গণ্য শিক্ষকদের বদলি করা হয়েছিল। তা নিয়েও মামলা হয়। তার পর থেকে সেই বদলি স্থগিত রাখা হলেও বদলি হওয়া শিক্ষকেরা অবশ্য পুরনো স্কুলে ফিরতে পারেননি বলেই খবর।