ফাইল চিত্র।
রাজ্যের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক এবং শিক্ষিকাদের একাংশের বদলির নির্দেশের উপরে আপাতত স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য অণিমা নাথ নামে এক শিক্ষিকার বদলির নির্দেশ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন। আদালত সূত্রের খবর, এই ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নিজের জন্য আলাদা করে মামলা করতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অণিমার মামলার রায় বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপরেই প্রযোজ্য হবে বলে ওই সূত্রের দাবি।
অণিমার আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলের বদলির নির্দেশ বৈধ নয়। কারণ, যে নিয়মে চুক্তির ভিত্তিতে অণিমা-সহ মামলাকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তাতে ভিন্ন জেলায় বদলি করার সুযোগ নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও হুগলির বাসিন্দা অণিমাকে মালদহ জেলায় বদলি করেছিল শিক্ষা দফতর। কোন নিয়মে বদলি করা হয়েছে শিক্ষা দফতরের কাছে তা জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য। কিন্তু সেই প্রশ্নের কোনও সন্তোষজনক উত্তর শিক্ষা দফতরের কৌঁসুলি দিতে পারেননি। এ দিন সকালেও এক প্রস্থ শুনানি হয় এবং সেখানেও বিচারপতি রাজ্যকে নিজের নির্দেশের ব্যাখ্যা দিতে বলেন। রাজ্যের তরফে কোনও সদুত্তর না পেয়ে তিনি বদলির নির্দেশ স্থগিত করে দেন।
প্রসঙ্গত, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক এবং শিক্ষিকাদের একাংশ চাকরি সংক্রান্ত দাবিদাওয়া নিয়ে বারবার শিক্ষা দফতরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। অভিযোগ, তাতে লাভ তো হয়নি, উল্টে বিক্ষোভকারীদের তাঁদের বাড়ি থেকে দূরবর্তী জেলায় বদলি করা হয়। এই বদলির বিরুদ্ধে
প্রতিবাদ দেখাতে এসে সল্টলেকে বিকাশ ভবনের সামনে প্রকাশ্যে বিষ পান করেছিলেন কয়েক জন শিক্ষিকা। তার পরেই তাঁরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এ দিন অভিযোগ করেন, “চুক্তিভিত্তিক কাজ করে মাসে ৮-১০ হাজার টাকা রোজগার করেন মহিলা। নামখানায় বাড়ি। তাঁকে পাঠিয়ে দিল দিনহাটায়। কেন, সে প্রতিবাদ করেছেন বলে? অনৈতিক, বেআইনি বদলি হচ্ছে। আদালত সেই বদলির নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে কার্যত চড় মেরেছে।”
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য সব সময়ই অস্বস্তিতে। রাজ্য যেখানে যা সিদ্ধান্ত নেয়, সব আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। এ ধরনের নজির আর কোনও রাজ্যে নেই।’’