তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আপাতত রক্ষাকবচ দিল না কলকাতা হাই কোর্ট। ইডির পক্ষে যা নথি চাওয়া হয়েছে, আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে তা জমা দিতে হবে অভিষেককে। তার আগে এই পাঁচ দিন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের বিরুদ্ধে যাতে কড়া কোনও পদক্ষেপ না করা হয়, সেই নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন অভিষেকের আইনজীবী। কিন্তু আদালত রক্ষাকবচ দিতে রাজি হয়নি।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে অভিষেকের মামলার শুনানি ছিল। গত ৩ অক্টোবর অভিষেককে সমন পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। কিন্তু দিল্লিতে দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় অভিষেক সে দিন হাজিরা দেননি। উল্টে হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। আদালতে অভিষেকের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেলের কাছে যে সব নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে, সেগুলি প্রায় ১০ বছরের পুরনো। সেগুলি জোগাড় করতে কিছুটা সময় দরকার।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি সেন ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। অভিষেককে আপাতত সশরীরে হাজিরা দিতে হবে না বলেও জানিয়েছে আদালত। তবে বিচারপতি এ-ও জানিয়েছেন, নথি জমা দেওয়ার জন্য এক ঘণ্টাও অতিরিক্ত সময় অভিষেক পাবেন না। ১০ তারিখের মধ্যে যাবতীয় নথি ইডির কাছে জমা দিতে হবে। তা না-করলে ইডি যখন খুশি অভিষেককে তলব করতে পারবে। এর পরেই মক্কেলের জন্য রক্ষাকবচ চান অভিষেকের আইনজীবী জিষ্ণু সাহা। তিনি বিচারপতিকে বলেন, ‘‘আদালত বলে দিক, ১০ অক্টোবরের আগে এই ক’দিন অভিষেকের বিরুদ্ধে কড়া কোনও পদক্ষেপ করা হবে না।’’ বিচারপতি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমরা কিছু বলব না।’’
ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁদের কাছে অনেক তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। তার ভিত্তিতে অভিষেককে সামনাসামনি জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। শুধু নথি পাঠালে হবে না। ওই আইনজীবী বলেন, ‘‘আমরা এখনই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতে তৈরি আছি।’’ কিন্তু তাতে সায় দেননি বিচারপতি সেন। নথি দেখে সন্তুষ্ট না-হলে তিনি ইডিকে সমন পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘অভিষেক যদি কোনও নথি না দেন, তবে তাঁর হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য আমরা নির্দেশ দেব। তখন ওঁর কোনও অজুহাতকেই আর মান্যতা দেওয়া হবে না।’’
ইডিকে নিয়োগ মামলার তদন্তে গতি আনার পরামর্শও দিয়েছে আদালত। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক মামলার তদন্ত শেষ করার কথা বলেছেন বিচারপতিরা। যদিও মৌখিক ভাবে ইডিকে এই সময় দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোনও লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়নি।