শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ থেকে পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর করার আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের পর্যবেক্ষণ, ওই দিন বিরোধী দলনেতা যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন, তা নির্দিষ্ট ভাবে কাউকে আঘাত করছে না। তবে শুভেন্দুকে তদন্তে সহযোগিতা করতে বলেছে উচ্চ আদালত।
একই সঙ্গে শুভেন্দুর উদ্দেশে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, অপরাধ না হলেও এমন পদমর্যাদার মানুষদের জনসমক্ষে এমন ধরনের মন্তব্য করা উচিত নয় বলে মনে করছে আদালত। সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির পদের প্রতি মানুষের খারাপ ধারণা হতে পারে। কিন্তু তার পরেও আদালত মনে করে, সে দিনের কুমন্তব্যের জন্য শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার কোনও ধারা প্রয়োগ করা যায় না। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে বাকি এফআইআর নিয়ে পুজোর ছুটির পরে আদালত খুললে পরবর্তী শুনানি হবে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর প্রতিবাদে গত ১৭ অগস্ট বিজেপির কর্মসূচিতে অংশ নেন শুভেন্দু। সেই সময় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশের অভিযোগ ছিল, ওই কর্মসূচিতে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের কটূক্তি করেন শুভেন্দু। রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে সওয়াল করে বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে পুলিশ এফআইআর করতে চায়। তিনি অত্যন্ত খারাপ ভাষায় পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন। পুলিশকে গালিগালাজ করেছেন। ওই ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ আদালতে জমা দেওয়া যেতে পারে। অন্য কর্মসূচিতেও শুভেন্দুকে পুলিশের উদ্দেশে খারাপ মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে।’’
শুভেন্দুর আইনজীবী পরমজিৎ সিংহ পাটোয়ালির বক্তব্য ছিল, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে নতুন মামলা করতে গেলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নজরে রাখা প্রয়োজন। হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা গত ডিসেম্বরে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া নতুন করে কোনও এফআইআর দায়ের করা যাবে না শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। বিচারপতি মান্থার নির্দেশে হস্তক্ষেপ করেনি শীর্ষ আদালত। এর আগে নতুন এফআইআর করার নির্দেশ খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মামলাটি আবার হাই কোর্টে ফেরত পাঠানো হয়। তাই আগে ওই মূল মামলাগুলির অবস্থান স্পষ্ট হওয়া দরকার। না হলে তার আগে নতুন এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য, যাদবপুরে শুভেন্দু ‘অপরাধযোগ্য’ কোনও মন্তব্য করেননি।