কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
খড়্গপুর আইআইটিতে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর ভূমিকায় অসন্তুষ্ট কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার এই সংক্রান্ত মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তদন্তের কোনও অগ্রগতি হয়নি। এমনকি কোনও পড়ুয়াকে এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেনি সিট। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, ২৫ নভেম্বরের পরে পরীক্ষা শেষ হলে পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিট।
আদালত আরও জানায়, কোর্ট সিটের কাছে ‘স্বচ্ছ’ রিপোর্ট চায়। আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সিটকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরেই আদালত শুনানি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। হাই কোর্ট জানিয়েছে, আইআইটি কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে পারবেন সিটের সদস্যেরা।
গত বছর ১৪ অক্টোবর খড়্গপুর আইআইটি-র হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় অসমের বাসিন্দা বিটেক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া ফাইজ়ান আহমেদের ঝুলন্ত দেহ। পরিবারের অভিযোগ ছিল, তাঁকে খুন করা হয়েছে। এ নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন পরিবারের সদস্যেরা। ফাইজ়ান আত্মহত্যা করেছেন না কি তাঁকে খুন করা হয়েছে— তা খতিয়ে দেখতে হাই কোর্টের নির্দেশে তৈরি করা হয় বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেই কমিটির রিপোর্টে উঠে আসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। রিপোর্টে বলা হয়, ওই ছাত্রের মাথার পিছনের দিকে ভারী কোনও জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। তার চিহ্নও পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল ওই রিপোর্টে। ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি দাবি করে, পুলিশের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আঘাত লাগার বিষয়টি ছিল না।
এর আগে গত ১৬ অগস্ট খড়্গপুর আইআইটিতে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য পুলিশের এডিজি (হেড কোয়ার্টার) কে জয়রামনের নেতৃত্বেই তদন্ত হবে বলে জানায় হাই কোর্ট। তবে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর তদন্তে কোনও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়নি। ওই দিন হাই কোর্ট জানায়, মৃত ছাত্রের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ধরেই এগোবে তদন্ত। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অফিসার সুশান্ত দাঁ-র রিপোর্ট খারিজ করে। সিআইডির হোমিসাইড বিভাগের অফিসার কৌশিক বসাককে তদন্তকারী অফিসার হিসাবে নিয়োগের যে নির্দেশ দিয়েছিল একক বেঞ্চ, তা খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্ট আইপিএস আধিকারিক জয়রামনকে কোনও দক্ষ অফিসারকে তদন্তকারী অফিসার হিসাবে নিয়োগ করার নির্দেশ দেয়।