জরুরি ভিত্তিতে মামলাটি শোনার আর্জি জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর আইনজীবী। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
এগরায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার কলকাতা হাই কোর্ট সেই দাবিতে মামলা করার আবেদন মঞ্জুর করল। শুভেন্দুর আইনজীবী এ বিষয়ে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তাঁকে মামলা দায়ের করার অনুমতি দিল হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ। জরুরি ভিত্তিতে মামলাটি শোনার আর্জি জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর আইনজীবী। আদালত সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই মামলাটির শুনানি হতে পারে।
মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল এলাকায় একটি বাড়িতে তীব্র বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে গ্রামের রাস্তায় ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় দেহ। পরে জানা যায়, ওই বাড়িতে বাজি বানানোর কাজ চলছিল। এর পরেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কী করে এমন ঘটনা ঘটল তা জানতে সিআইডি তদন্তেরও নির্দেশ দেন মমতা। তত ক্ষণে বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি তুলেছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুও সরব হয়েছেন এ নিয়ে। বিরোধীদের দাবি শুনে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা জানান, এনআইএ তদন্ততে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। বিরোধীরা যদি চায় এনআইএ তদন্ত করতে পারে।
বুধবার ওই দাবির কথা জানিয়ে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন শুভেন্দুর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী। ঘটনাচক্রে হাই কোর্ট সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে যখন মামলার অনুমতি দিয়েছে, তখন শুভেন্দু নিজে পৌঁছে গিয়েছেন এগরায়। সেখানে পৌঁছে স্বজনহারাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়িয়ে এগরার ঘটনায় আবারও এনআইএ তদন্তের দাবিও জানান বিরোধী দলনেতা। যদিও তৃণমূলের তরফে শুভেন্দুর এই দাবিকে ‘শকুনের রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছে।
বুধবার হাই কোর্ট এগরা বিস্ফোরণে এনআইএ তদন্তের দাবিতে মামলার অনুমতি দেওয়ার পর তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল বলেন, ‘‘এটা নিছকই একটি দুর্ঘটনা। শুভেন্দু যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন তাঁর এলাকায় কি কোনও দুর্ঘটনা হয়নি?’’ কুণাল বলেন, আসলে বিরোধী রাজনীতি করার জন্য বিরোধী দলনেতার হাতে কোনও ইস্যু নেই। তাই উনি শকুনের রাজনীতি করছেন।’’ এগরা বিস্ফোরণ নিয়ে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান স্পষ্ট করে কুণাল বুধবার বলেন, ‘‘যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিজে এগরার ঘটনা নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন, উনি নিজেই বলেছেন, দরকার হলে এনআইএ তদন্ত হোক, তখন এই অশান্তির অর্থ কী?’’