গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
জলন্ত হুলা শরীরে গেঁথে আছে। তাই নিয়ে ছটফট করছে হাতি। স্বাধীনতা দিবসে পিঠে জ্বলন্ত লোহার রড বিঁধে থাকা হাতিটির যন্ত্রণাকাতর চিৎকার আজও ঝাড়গ্রামের অনেক মানুষের কানে বাজে। পর পর হাতির মৃত্যু এবং নিখোঁজের ঘটনায় হলফনামা চেয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু মঙ্গলবার বন দফতরের দেওয়া হলফনামায় অসন্তোষ প্রকাশ করল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। ঝাড়গ্রামে হাতির মৃত্যু এবং নিখোঁজের ঘটনায় ওই জেলার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও)-র উদ্দেশে বলা হয়, ‘‘আদালত কিছু প্রশ্নের উত্তর চেয়েছিল। হলফনামায় তার জবাব না দিয়ে অফিসার কোর্টকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। এই রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ বরদাস্ত করা যায় না।’’ এর পরই রাজ্যকে সতর্ক করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘ওই হলফনামা প্রত্যাহার করা-না হলে জরিমানা করব।’’
গত ২ বছরে ঝাড়গ্রামে তিনটি হাতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তার মধ্যে দু’টি হাতিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ রয়েছে। অন্য দিকে, গত বছর একটি হাতিকে জনবহুল এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় বন দফতর। পরে সেই হাতির আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওই সমস্ত অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। ঘটনাক্রমে হাই কোর্ট বন দফতরের আধিকারিকের কাছে হলফনামা তলব করে। মঙ্গলবার ওই হলফনামা আদালতে জমা পড়ে। কিন্তু মামলাকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘হলফনামা দেখে মনে হচ্ছে হাতি রক্ষায় বন দফতরের অফিসারদের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।’’ যার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘এটা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আমি এটা মনে করি না যে, এক জন ফরেস্ট সার্ভিস অফিসার হৃদয়হীন হবেন। কারও নির্দেশ পালন করতে গিয়ে তিনি এমনটা করতে পারেন।’’
শেষ পর্যন্ত রাজ্যের তরফে হলফনামা প্রত্যাহার করার কথা জানানো হয়। আগামী শুনানিতে রাজ্যের তরফে আবার হলফনামা দেওয়া হবে আদালতে।