রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ এনে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। প্রতীকী ছবি।
রাজ্য কি সত্যিই কেন্দ্রীয় বরাদ্দের প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকা নয়ছয় করেছে? উত্তর জানতে এই সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় রাজ্যের অর্থসচিবকে জুড়তে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। একই সঙ্গে যে কেন্দ্রীয় সংস্থা ক্যাগ (কম্পট্রোলার এবং অডিট জেনারেল)-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে, তাদেরও এই মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ এনে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে এই ঘটনার সিবিআই তদন্তেরও দাবি করেছিলেন তিনি। তবে জগন্নাথ ওই মামলা বিজেপি নেতা হিসাবে করেননি। সাংবাদিকের পরিচয়ে এই মামলা করেন তিনি। তিনি ছাড়াও মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী সুমনশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী ঋত্বিক পাল।
গত বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। আবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২১ সালের ৩১ মার্চে ক্যাগের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলার বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের পাঠানো কোটি কোটি টাকার হিসাব মিলছে না। এ ব্যাপারে আদালতে একটি হিসাব দিয়ে মামলাকারীরা জানান, গত কয়েকটি অর্থবর্ষে বিভিন্ন প্রকল্প বাবদ কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে যে টাকা রাজ্য সরকার পেয়েছে, তার মধ্যে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯৯ কোটি টাকার হিসাব জমা দেওয়া হয়নি। জনস্বার্থ মামলায় ক্যাগের ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই আর্থিক গরমিলের সিবিআই তদন্তের আবেদন জানানো হয়। বলা হয়, জনগণের স্বার্থে পাঠানো টাকা লুট করা হয়েছে। তাই অবিলম্বে এর তদন্ত হওয়া দরকার। মঙ্গলবার আদালতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ৩০ জানুয়ারি মামলাটির শুনানি হতে পারে।
এর আগে রাজ্যকে দেওয়া কেন্দ্রের অর্থ অন্য খাতে খরচ করা নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। এই জনস্বার্থ মামলাতেও মামলাকারীরা জানিয়েছেন, হিসাব না দেওয়া টাকার মধ্যে পুরসভা এবং নগরোন্নয়ন দফতরের ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি রয়েছে। পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে কেন্দ্রে দেওয়া অর্থের মধ্যে ৮১ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকার হিসাব দেওয়া হয়নি। শিক্ষাক্ষেত্রেও হিসাব না দেওয়া অর্থের পরিমাণ ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।