আদালতে ১০০ দিনের কাজের টাকা না পাওয়া নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন ক্ষেতমজুরদের একটি সংগঠন। ফাইল চিত্র
কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে বলে বহু বার অভিযোগ করেছে বাংলার সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্য সভায় এই নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন। এমনকি, গরিবের টাকা আটকে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। এ বার কলকাতা হাই কোর্ট কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে জানতে চাইল, কেন এই টাকা বন্ধ করা হয়েছে? এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে রিপোর্ট-সহ জবাব দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কেন্দ্রকে বলা হয়েছে, আগামী ১৪ দিনের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট কলকাতা হাই কোর্টে জমা দিতে হবে। তার এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য নিজেদের বক্তব্য হলফনামার আকারে জমা দেবে আদালতে।
কলকাতা হাই কোর্টে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজদুর সমিতি। মঙ্গল বার সেই মামলা শুনানির জন্য ওঠে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, যাঁরা ১০০ দিনের কাজ করেন, কাজ করার একটি নির্দিষ্ট সময় পরে তাঁদের প্রাপ্য টাকা জবকার্ড হোল্ডারদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে সেই টাকা দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
রাজ্যের প্রাপ্য এই টাকা কেন্দ্র অকারণে বন্ধ করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার রাজ্যও আদালতকে জানায়, মনরেগা প্রকল্পের এই অর্থ কেন্দ্র পাঠায়। গত কয়েক মাস ধরে তারা টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। ১০০ দিনের কাজ করেও প্রাপ্য পাননি হাজার হাজার শ্রমিক। অথচ বার বার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে একাধিক বার বিষয়টি এনেও কাজ হয়নি।
মামলাকারীদের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের কাছে জবাব চায় হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ প্রশ্ন করে, রাজ্যে ১০০ দিনের টাকা কেন বন্ধ করা হল? জবাবে কেন্দ্রের আইনজীবী জানান, কেন্দ্রের পাঠানো এই টাকা রাজ্যের মাধ্যমে খরচ হয়। এই টাকা নয়ছয়ের প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করার অভিযোগও রয়েছে। তাই গত কয়েক মাসের টাকা বন্ধ করা হয়। রাজ্যের অবস্থানে কেন্দ্র সন্তুষ্ট হলে আবার টাকা পাঠানো হবে।
এর পরেই কেন্দ্রকে এই ব্যাপারে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। বেঞ্চ বলে, ‘‘এই প্রকল্পের অর্থ সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে কেন্দ্রকে। আগামী ২০ জুন আদালতে এ বিষয়ে রিপোর্ট দিতে হবে। পরের এক সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জানাতে পারবে রাজ্য।’’ জুলাই মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি বলে আদালত সূত্রে খবর।