৩ মে-র পর সরকারি নির্দেশিকা মেনে চালাতে হবে অ্যাপ ক্য়াব, নির্দেশ পরিবহণ দফতরের। প্রতীকী ছবি
৩ মে থেকে সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হল অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলিকে। বুধবার কসবার পরিবহণ ভবনে পরিবহণ আধিকারিক, পুলিশ কর্তা, ও ক্যাব সংস্থাগুলির প্রতিনিধি ও ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বৈঠকে হাজির চালকদের পাঁচ সংগঠনের পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবি পেশ করা হয়। সম্প্রতি পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে ১২ শতাংশ সারচার্জ বৃদ্ধি করে অ্যাপ ক্যাব সংস্থা উবর। ক্যাব সংস্থার একতরফা সিদ্ধান্তের ফলে নড়েচড়ে বসে পরিবহণ দফতর। তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেন পরিবহণ মন্ত্রী। বুধবার পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, ৩ মে থেকে সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলিকে। গত ৩ মার্চ পরিবহণ দফতর এ বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল। কিন্তু অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলি নিজেদের ইচ্ছেমতো পরিষেবা দিচ্ছিল। কিন্তু বুধবারের বৈঠকে সরকার তার অবস্থান স্পষ্ট করে দিল।
সূত্রের খবর, বৈঠকে অ্যাপ ক্যাপ সংস্থাগুলির পাঁচটি ইউনিয়ন জানিয়েছে, পেট্রোপণ্যের ক্রমবর্ধমান দাম বৃদ্ধির কারণে তারা ভাড়া বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। সে বিষয়ে তাদের কাছে সমাধানের প্রস্তাব চান পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা। তার পরেই ১২ দফা দাবির সনদ তুলে দেওয়া হয় মন্ত্রীর হাতে। দাবিতে বলা হয়েছে, এসি ও নন-এসি— দু’টি ক্ষেত্রকে আলাদা করে দেখতে হবে। কিলোমিটার পিছু নন এসি ক্যাবের ক্ষেত্রে চালকদের পাওনা ২০ টাকা ও এসি ক্যাবের ক্ষেত্রে ২৫ টাকা করতে হবে। রাত দশটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত পরিষেবায় ২০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া পাওয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে। কলকাতার বাইরে গেলে চালকের পাওনা কিলোমিটার পিছু ৩০ টাকা করতে হবে। যখন-তখন চালকদের আইডি ব্লক করা যাবে না এবং পুলিশ-প্রশাসনের জুলুম বন্ধ করতে হবে। বৈঠকে হাজির ব্যক্তিদের কথা শোনার পাশাপাশি আগামী এক মাসের মধ্যে সরকার পক্ষ তাদের অবস্থান জানাবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী। অনলাইন ক্যাব অপারেটর গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা সরকারি নির্দেশ মেনে পরিষেবা দিতে রাজি। কিন্তু আমাদের দাবিও সরকারকে মানতে হবে। কারণ পথে নেমে যে সমস্ত সমস্যার মুখে আমাদের পড়তে হয়, সেই সমস্যার সমাধানের কথাই আমরা আমাদের দাবি-সনদে জানিয়েছি।"
ক্যাবের সমস্যা ছাড়াও বৈঠকে রাজ্যের লাক্সারি ট্যাক্সি পরিষেবা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জয়েন্ট কাউন্সিল অব লাক্সারি ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন-এর সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ বলেন, "ক্যাব ট্যাক্সির সমস্যার কথা যেমন আজকের বৈঠকে উঠে এসেছিল, ২০০৮ সাল থেকে লাক্সারি ট্যাক্সির ভাড়া না বাড়ার বিষয়টিও আমি মন্ত্রীকে জানিয়েছি। করোনা সংক্রমণের কালে রাজ্য সরকারের প্রকল্প ‘গতিধারা’-ও বন্ধ রয়েছে। আমরা চাই, রাজ্য সরকার সেই প্রকল্পটিও আবার নতুন করে শুরু করুক। তাতে এক দিকে যেমন পরিবহণ শিল্প চাঙ্গা হবে, তেমনই রাজ্যে কর্মসংস্থান হবে কয়েক গুণ।"