মল্লিকবাজারের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে
সংশোধিত নাগরিক আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র বিরুদ্ধে আন্দোলনের রাস্তা থেকে তিনি যে সরছেন না, লাগাতার কর্মসূচিতে আবারও বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবারও পথে নামলেন তৃণমূল নেত্রী। রাজাবাজার থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত মিছিল শেষে সভামঞ্চ থেকে ফের ঘোষণা করলেন, সিএএ-এনআরসি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। জীবন দিয়েও অধিকার রক্ষার আন্দোলন চলবে।
সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে প্রায় প্রতি দিনই মিছিল, পদযাত্রা, সভা করছেন মমতা। এ দিন সেই কর্মসূচি ছিল রাজাবাজার থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত। প্রায় প্রতি দিনই মিছিলের শুরুতে সিএএ-এনআরসি-বিরোধী শপথবাক্য পাঠ করাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনও সে ভাবেই শুরু হয় মিছিল। শিয়ালদহ, মৌলালি মোড় হয়ে মল্লিকবাজারে মিছিল শেষে একটি সভাও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই সভা থেকে টানা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তৃণমূল নেত্রী। আগামী ২৮ ডিসেম্বর রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে অবস্থান-বিক্ষোভ করবে তৃণমূল। এ ছাড়া আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি শিলিগুড়িতে সিএএ-এনআরসি বিরোধী মিছিলে হাঁটবেন তিনি নিজে। ২৯ তারিখ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন হেমন্ত সোরেন। সেই শপথগ্রহণে আমন্ত্রণ এসেছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সেই অনুষ্ঠানে তিনি থাকবেন বলে জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘৩০ ডিসেম্বর পুরুলিয়ায় সভা করে কলকাতায় ফিরব আমি।’’
মিছিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মল্লিকবাজারের সভায় মমতা বলেন, ‘‘জীবন দিয়েও অধিকার রক্ষার আন্দোলন চলবে। ভয় দেখালে বা জবরদস্তি করলে দেশের জনগণ, বাংলার মানুষ তা মেনে নেবেন না।’’ একই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যতদিন না নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি প্রত্যাহার হচ্ছে, এই আন্দোলন চলবে।’’
‘পোশাক দেখেই বিক্ষোভকারীদের চেনা যায়’— প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই মন্তব্যের জেরে দেশ জুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জনতাকে সাবধান করে দেন, ‘‘বিজেপি চেষ্টা করবে পোশাক বদলে অস্থিরতা তৈরি করতে। আপনারা সেই প্ররোচনার ফাঁদে পা দেবেন না। কেউ ডিভাইড অ্যান্ড রুল করার চেষ্টা করলে, দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করলে আপনারা রুখে দাঁড়াবেন।’’ পাশাপাশি এ দিনও ছিল ‘আমরা কারা, নাগরিক’, ‘সিএএ-এনআরসি মানছি না, মানব না’র মতো স্লোগান।