Bengal Ration Distribution Case

ইডি ঘরে ঢুকতেই পাশের বাড়ির ছাদে ফোন ছুড়লেন ব্যবসায়ী! কৈখালিতেও দেখা গেল বড়ঞার সেই ছবি

গত বছরের এপ্রিলে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদের সময় শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে পাঁচিল টপকে নিজের দু’টি মোবাইল পুকুরে ছুড়ে আসেন বিধায়ক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:২৯
Share:

পাশের বাড়ির ছাদ থেকে ফোন দু’টি উদ্ধার করছেন তদন্তকারীরা। —নিজস্ব চিত্র।

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার সকালে সল্টলেক-সহ ছয় জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সূত্রে খবর, কৈখালির এক শেয়ার ব্যবসায়ীর বাড়িতেও হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আধিকরিকরা হানা দেওয়ার খবর পেয়েই নিজের দু’টি মোবাইল পাশের বাড়ির ছাদে ছুড়ে দেন ওই ব্যবসায়ী। পরে পাশের বাড়ি থেকে সেই মোবাইল দু’টি উদ্ধার করেন ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা।

Advertisement

গত বছরের এপ্রিলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসুস্থতার কথা বলে বাড়ির বাইরে বেরোতে চান জীবনকৃষ্ণ। বাড়ির পিছনের শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে পাঁচিল টপকে নিজের দু’টি মোবাইল পুকুরে ছুড়ে আসেন বিধায়ক। তাঁর এই কাণ্ডে হকচকিয়ে যান তদন্তকারীরাও। বিধায়কের মোবাইল থেকে নিয়োগ দুর্নীতির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া থাকতে পারে মনে করে তখনই মোবাইল দু’টি উদ্ধারে নেমে পড়ে সিবিআই। স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতায় সেই মোবাইল দু’টি উদ্ধারও করা হয়েছিল। মোবাইল থেকে অনেক তথ্যও তদন্তকারী আধিকারিকদের হাতে উঠে আসে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।

মঙ্গলবার সকালে খানিকটা একই রকম দৃশ্য দেখা গেল কৈখালিতেও। পুকুরের জলে না ফেললেও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আধিকারিকরা ওই ব্যবসায়ীর আবাসনে প্রবেশ করার পর তিনি তাঁর ফোন দু’টি জানালা দিয়ে ছু়ড়ে ফেলে দেন। সঙ্গে ছুড়ে দেন একটি পাঁচশো টাকার নোটও। ফোন দু’টি পাশের বাড়ির ছাদে গিয়ে পড়ে। তবে পরে ফোন দু’টি উদ্ধার করে ইডি।

Advertisement

তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন, কৈখালির ওই ব্যবসায়ীর দু’টি ফোনে ‘আর্থিক দুর্নীতি’ সংক্রান্ত অনেক তথ্য লুকিয়ে থাকতে পারে। আর সেই কারণেই তড়িঘড়ি সেগুলি লোপাটের চেষ্টা করা হয়। ফোন দু’টি বাজেয়াপ্ত করে সেই ফোনের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে থেকে ফের সক্রিয় হল ইডি। মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ প্রথমে সল্টলেকের আইবি ব্লকের একটি বাড়িতে হানা দেন ইডির তদন্তকারীরা। পরে জানা যায়, বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ইডি আধিকারিকেরা নিউ আলিপুর, পার্ক স্ট্রিট, রাসেল স্ট্রিট, বাগুইহাটি, কৈখালি এলাকার আরও পাঁচটি জায়গায় হানা দিয়েছেন। তদন্তকারীদের সঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও।

সোমবার আইবি ব্লকের একটি বাড়ির দরজায় কড়া নাড়েন ইডি আধিকারিকেরা। এক মহিলা দরজা খুললে তদন্তকারীদের তরফে বিশ্বজিৎ দাস নামের এক ব্যবসায়ীর বিষয়ে খোঁজখবর করা হয়। সেই ব্যক্তি বাড়ি নেই জেনে, ফোনেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইডি আধিকারিকেরা। পরে ‘সার্চ ওয়ারেন্ট’ দেখিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢোকেন ইডি আধিকারিকেরা। তল্লাশির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ।

ইডি সূত্রের খবর, রেশন মামলার তদন্তে যে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করা হয়েছিল, সেই টাকা কোথায় এবং কী ভাবে বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা জানতেই এই তল্লাশি অভিযান চলছে। বাংলায় রেশন সংক্রান্ত আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করছে ইডি। তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই তারা গ্রেফতার করেছে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। জ্যোতিপ্রিয়ের সূত্র ধরেই এই মামলায় বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্করের নাম পায় ইডি। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্যবসায়ী তথা চাল-গমের মিল মালিক বাকিবুর রহমান এবং বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্করেরও। রেশনকাণ্ডে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা, সন্দেশখালির শাহজাহান শেখকেও খুঁজছে ইডি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement