শুক্রবার ঢাকা থেকে দু’টি বাস এসে পৌঁছয় ফুলবাড়ি সীমান্তে। নিজস্ব চিত্র
ভারত ও বাংলাদেশের নাগরকিদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। ঢাকা থেকে সোজা বাসে করে সীমান্ত পার হয়ে শিলিগুড়ি এসে শৈলশহর দার্জিলিং তো বটেই, সিকিম ঘোরারও ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে। শুক্রবার দুপুরে অবশেষে প্রথম বার পরীক্ষামূলক ভাবে ঢাকা থেকে দু’টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধা হয়ে ভারতের মাটি, ফুলবাড়ি সীমান্ত ছুঁয়েছে।
শিলিগুড়ি থেকে যাত্রীদের ছোট গাড়িতে করে পাহাড়ি রাস্তায় দার্জিলিং এবং গ্যাংটক নিয়ে যাওয়া হবে। বাংলাদেশ পরিবহণ কর্পোরেশন বাসগুলি চালাবে। এ দিন সরকারি স্তরে বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৪১ জন যাত্রীকে নিয়ে বাস দু’টি শিলিগুড়ি এসেছে। প্রথবারের বাসযাত্রীরা রাস্তা, পরিবেশ, থাকার জায়গা দেখে ফেরার পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঢাকা-শিলিগুড়ি বাস সার্ভিস চালু হবে। এতে উত্তরবঙ্গের মানুষও খুশি। বাংলাদেশ যেতে গেলে সরাসরি বাসেই যাওয়া যাবে শিলিগুড়ি থেকে।
সরকারি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি নেপালের কাঠমাণ্ডু যাওয়ার জন্য একটি বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। দেড় বছর আগে বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য সিকিম খুলে যাওয়ায় প্রতিদিনই সরাসরি বাসের চাহিদা বাড়ছিল। এখন বাংলাদেশীরা চ্যাংরাবান্ধা বা ফুলবাড়ি সীমান্ত পৌঁছে শিলিগুড়ি শহরে আসেন। তার পরে ছোট গাড়ি নিয়ে তাঁরা সিকিমের গ্যাংটক, পেলিং, নাথুলা বা ছাঙ্গুর মতো এলাকায় ঘুরতে যাচ্ছেন। এতে পরিবহণ খরচ বেশি পড়ছে। সেখানে সরাসরি বাস সার্ভিস থাকলে বাংলাদেশী পর্যটকরা অনেকটাই কম খরচে পাহাড়ে পৌঁছতে পারবেন। তেমনই, এ পার থেকে পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে যাওয়া যাবে।
প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এসেছেন বাংলাদেশের পরিবহণ এবং সেতু মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব মহম্মদ সফিকুল করিম। তিনি বলেন, ‘‘পরীক্ষামূলক ভ্রমণের পরেই নিয়মিত বাস সার্ভিসের দিন ক্ষণ দ্রুত ঘোষণা করে দেওয়া হবে। রবিবার ছাড়া সপ্তাহের ছ’দিন বাসটি চলবে। ভাড়া-সহ যাবতীয় বিষয় দ্রুত ঠিক করে ঘোষণা করে দেওয়া হবে।’’ বাসের যাত্রী জিনাত জোয়ারদার রিপা বলেন, ‘‘এত দিন এই এলাকাগুলি আমাদের কাছে শুধু ছবিই ছিল। এ বার সেই স্বপ্ন বাস্তব হচ্ছে।’’
পর্যটন সংগঠনগুলির তথ্য বলছে, গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গের যত বিদেশি পর্যটক ঘুরতে আসেন, তার মধ্যে সব চেয়ে বেশি সংখ্যায় থাকেন বাংলাদেশীরা। শুধু ঘোরা নয়, সে দেশের বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার বিজনেস ট্যুর হিসাবে দার্জিলিং, সিকিম বা ডুয়ার্সকে বেছে নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে রংপুর হয়ে বাগডোগরা বিমান চালু করার জন্য দুই দেশের বণিক সভা তৎপর হয়ে উঠেছে। সড়ক থেকে বিমান-এই পরিবহণ ব্যবস্থা আরও মজবুত হলে পর্যটন শিল্প তো বটেই তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতো ক্ষেত্রগুলিরও বিকাশ হবে।