এই চিত্র আজ ফের ফিরতে চলেছে বলে আশঙ্কা।—ছবি পিটিআই।
কয়েক সপ্তাহে কলকাতায় দেড় হাজার সরকারি বাসের পাশাপাশি কমবেশি আড়াই হাজার বেসরকারি বাস রাস্তায় নামায় সমস্যা কিছুটা কমেছিল। কিন্তু আজ, সোমবার কলকাতা-সহ সারা রাজ্যে যাত্রীদের হয়রানি আবার চরমে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরে জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসও জানিয়েছে, সরকারি অনুদানে বাস-মালিকদের সমস্যা মিটবে না। ডিজেলের দাম বাড়ায় আজ থেকে তাঁদের পক্ষে বাস পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে রবিবার জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সন্ধ্যায় বৈঠক করেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। খোঁজখবর নেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও। কলকাতায় আরও শ’খানেক বাস নামানো হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগম থেকে আরও ৬০টি এবং উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগম থেকে আরও ৫০টি বাস আনা হচ্ছে। ওই সব বাস চলবে ডানলপ, চিড়িয়ামোড়, হাওড়া, ব্যারাকপুর, বারাসত, জোকা, কামালগাজি, বারুইপুর, সাঁতরাগাছি-সহ বিভিন্ন রুটে। পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। চন্দননগর, রিষড়া, শেওড়াফুলি-সহ ১৪টি গন্তব্য থেকে সকাল-বিকেলের ব্যস্ত সময়ে বিশেষ লঞ্চ পরিষেবা চালু করছে পরিবহণ দফতর। প্রতিটি লঞ্চ দুই-তৃতীয়াংশ যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করবে।
কিন্তু লোকাল ট্রেন ও মেট্রো বন্ধ। এই অবস্থায় বেসরকারি বাস কমে গেলে হয়রানি ফিরে আসার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘বাস নামানোর ব্যাপারে কাউকে জোর করার অবস্থায় নেই আমরা। যাত্রীদের ভোগান্তি চাই না। কিন্তু গত এক মাসে ক্ষতির বোঝা অনেক। ফলে পরিষেবা কতটা সচল থাকবে, বলতে পারছি না।’’
আরও পড়ুন: সিএএ থেকে করোনা, মমতাকে তোপ নির্মলার, পাল্টা উত্তর ডেরেকের
জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সরকারি অনুদান নিয়ে সারা রাজ্যের বাস-মালিকদের জন্য একই বিজ্ঞপ্তি চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকার ওই সুবিধা কলকাতার বাসের জন্য সীমাবদ্ধ করায় বৈষম্য দেখা দিচ্ছে। যে-হারে ডিজেলের দাম বাড়ছে, তাতে ভাড়া বৃদ্ধি ছাড়া বিকল্প নেই।’’ এক মাসে ডিজেলের দাম লিটারে ন’টাকা বেড়েছে। বাস-মালিকদের বক্তব্য, করোনা আবহে যাত্রী কমে যাওয়ায় পুরনো ভাড়ায় বাস চালানো অসম্ভব। ‘‘অনুদান স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। বাস নামলেই লোকসান বাড়ছে। তবে আমরা কাউকে বাস নামাতে বারণ করছি না,’’ বলেন মিনিবাস অপারেটরস কো-অর্ডিনেশন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ঘোষ।
আরও পড়ুন: ট্যাক্সির ভাড়া বাড়লে কি মান বাড়বে পরিষেবার
তবে বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট এবং অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। এ দিন দুই সংগঠনের বৈঠকের পরে বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সহ-সভাপতি টিটো সাহা বলেন, ‘‘ক্ষতির বোঝা চাপছে ঠিকই। তবে আমরা আলোচনার পথ খোলা রেখে সমাধান খোঁজার বিষয়ে আশাবাদী।’’ অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনটনে রাস্তায় বাস এমনিতেই কম। তাই পরিষেবা বন্ধের ডাক দেওয়ার সময় এটা নয়।’’