বেসরকারি বাসের ভাড়া কি যথেচ্ছ বাড়ছে? কী নিয়ম মানা হচ্ছে এ ক্ষেত্রে? আদালত জানতে চেয়েছিল রাজ্যের কাছে। ফাইল চিত্র।
বাসভাড়া বৃদ্ধির নিয়ম নিয়ে আদালতের প্রশ্নের কোনও জবাব দেয়নি রাজ্য। ‘অসন্তুষ্ট’ কলকাতা হাই কোর্ট তাই প্রকাশ্যেই ভর্ৎসনা করল পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। হাই কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করেছে, তবে কি রাজ্যের কাছে বাসের ভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্য নেই? তা না হলে জবাব দিতে দেরি হচ্ছে কেন? আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও জবাব না দেওয়ায় রাজ্যকে জরিমানাও করেছে আদালত।
মঙ্গলবার বাসের ভাড়া সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে। অভিযোগ ছিল, লকডাউন শেষ হওয়ার পর থেকেই বেসরকারি বাসের ভাড়া বৃদ্ধির কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না। ভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনও নীতিরই ধার ধারছে না বেসরকারি বাস সংগঠনগুলি। এই মামলার প্রেক্ষিতেই রাজ্যের কাছে তিনটি বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছিল হাই কোর্ট। পরিবহণ দফতরকে আদালতে এ ব্যাপারে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছিল। যা তারা দেয়নি। আদালত সময় বেঁধে দেওয়ার পরও হলফনামা জমা না দেওয়ায় রাজ্যকে ভর্ৎসনা করে আদালত। দেরির জন্য রাজ্যকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে কলকাতা হাই কোর্ট।
উল্লেখ্য, রাজ্যের কাছে আদালত যে তিনটি বিষয়ে জানতে চেয়েছিল সেগুলি হল— এক, ভাড়ার তালিকা সব বাসে লাগানো রয়েছে কি না। দ্বিতীয়ত, সরকারের বেঁধে দেওয়া বা নির্ধারিত ভাড়া বেসরকারি বাসগুলো নিচ্ছে কি না। এর পাশাপাশি, কোথাও অতিরিক্ত ভাড়া যাতে না নেওয়া হয় তা-ও নিশ্চিত করতে বলেছিল হাই কোর্ট। তৃতীয়ত, যাত্রীদের অভিযোগ গ্রহণ করার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল পরিবহণ দফতরের কাছে। যার জবাব আদালতকে দেয়নি পরিবহণ দফতর।
প্রসঙ্গত, বাসভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে এই জনস্বার্থ মামলাটি গত ফেব্রুয়ারি মাসে করেছিলেন আইনজীবী প্রত্যুষ পাটোয়ারী। তাঁর বক্তব্য ছিল, অতিমারির পর বেসরকারি বাস এবং মিনিবাসের ভাড়া ইচ্ছামতো বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ মোটর ভেহিকেল আইনের (১৯৮৯) ১৭৫ রুল অনুযায়ী, যাত্রীদের অভিযোগ নেওয়ার কথা বলা হলেও, বেশির ভাগ বাসে তা মেনে কমপ্লান্ট বুক রাখা হয়নি বলেও অভিযোগ করেছিলেন পাটোয়ারী।