সুধীর চন্দ্র শূর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি অ্যান্ড স্পোর্টস কমপ্লেক্স এ বছর রোবোটিকসের কোর্স চালু করল। ছবি: সুধীর চন্দ্র শূর ইনস্টিটিউট
রোবোটিকস-এর চাহিদা এখন কতখানি, তা ফের প্রমাণ করল করোনা অতিমারির এই কঠিন সময়। সুতরাং, এই বিষয়টি পড়ার পক্ষে এর চেয়ে আদর্শ সময় আর কী-ই বা হতে পারে?
ড. সুধীর চন্দ্র শূর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড স্পোর্টস কমপ্লেক্স (http://dsec.ac.in), (যা আগে ড. সুধীর চন্দ্র শূর ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নামে পরিচিত ছিল), এ বছরের পাঠ্যক্রমে রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে একটি নতুন কোর্স চালু করেছে। পশ্চিমবঙ্গে মাত্র যে কয়েকটি কলেজে এই বিষয়টি পড়ানো হয়, এই কলেজ তার অন্যতম।
“রোবোটিকস বিষয়টির চাহিদা এখন তুঙ্গে এবং আগামী অন্তত চার দশক এই বিষয়ের চাহিদা বজায় থাকবে। অতিমারির সময়ে দেখা গিয়েছে, রোবট কেমন করে করোনা রোগীকে খাবার, ওষুধ হাতের কাছে এনে দিয়েছে, এমনকী তার শরীরের তাপমাত্রা অবধি পরীক্ষা করেছে। জাপানের মতো দেশে ইতিমধ্য়েই বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে এখন মানুষের থেকে রোবটের সংখ্যা বেশি। ফলে, এই সময়ে রোবোটিকস বিষয়ে বি-টেক পড়া খুবই ঠিক কাজ হবে। এবং ইন্ডাস্ট্রিতেও এই বিষয়ের চাহিদা খুব বেশি।” জিআইএস গ্রুপের অধ্যক্ষ ড. ওমপ্রকাশ শর্মা এমনটাই জানালেন।
আরও পড়ুন: সংক্রমণ হার ফের ১০ শতাংশের বেশি, মোট আক্রান্ত ৩১ লক্ষ ছাড়াল
এই প্রতিষ্ঠান এই কোর্সের প্রথম বছরে ৩০জন ছাত্র ভর্তি করবে। যারা এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করবে, তাদের কাজ পাওয়ার সুযোগ আছে সেই সব ইন্ডাস্ট্রিতে, যেখানে অটোমেশন, সেনসর, মেকানিকস, বা একসঙ্গে এই সবগুলি নিয়ে কাজ করা হয়।
অন্যান্য যে কোর্সগুলি এই প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয়, তাদের মধ্যে রয়েছে অটোমোবাইল, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে বিটেক। পড়তে আগ্রহী ছেলেমেয়েদের ডব্লিউবিজেইই (WBJEE) বা জেইই মেন (JEE Main) অথবা জিআইএস প্রতিষ্ঠানের প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হবে।
প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সফট স্কিল ট্রেনিং এবং বিনামূল্যে অতিরিক্ত ক্লাসও করানো হয়। ড. শর্মা আরও জানান, “আমরা ইন্ডাস্ট্রি বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানাই, যাতে ছাত্ররা ইন্ডাস্ট্রির সাম্প্রতিক চাহিদা এবং কাজকর্মের হালহকিকত সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে পারে। এই কোসর্গুলি এক সপ্তাহ থেকে এক সিমেস্টার পর্যন্ত চলতে পারে।”
এই ইনস্টিটিউটে অ্যাডমিশন শুরু হয়ে গিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস এবং ভার্চুয়াল পরিকাঠামো নতুন ছাত্রদের স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত। ইন্ডাকশন এবং ওরিয়েন্টশন হবে অনলাইনে।
“ইন্ডাস্ট্রি ও সময়ের চাহিদা অনুযায়ী আমরা সিলেবাস সংশোধন এবং সংযোজন করি। অতিমারির কারণে যে মুহূর্তে ক্যাম্পাসে ক্লাস বন্ধ হল, সেই সময় থেকেই আমরা অনলাইন-এ ক্লাস চালু করতে পেরেছি। এ ছাড়া, অতিমারি সত্ত্বেও আমরা ৭৫ জন ফাইনাল বর্ষের ছাত্রছাত্রীকে প্লেসমেন্ট দিতে সক্ষম হয়েছি। কয়েক বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বেশ কিছু ছাত্রছাত্রীকেও আমরা প্লেসমেন্ট দিতে পেরেছি”, জানালেন অধ্যক্ষ।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ও অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ তিন বছেরের ডিপ্লোমা কোর্সেও ভর্তি চলছে। প্রতিটি কোর্সের জন্য ৬০টি করে আসন রয়েছে। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করা ছাত্রছাত্রীরা ডিপ্লোমা কোর্স পড়ার যোগ্য।
আরও পড়ুন: বীরভূমে ভিন্জাতে প্রেম, সাজা ‘গণধর্ষণ’
১১ একর জুড়ে তৈরি এই ক্যাম্পাসে ল্যাবরেটরি, সেমিনার রুম এবং মিনি অডিটোরিয়াম ছাড়াও রয়েছে একটি ইন্ডোর স্টেডিয়াম এবং একটি ফুটবল মাঠ। ছাত্রছাত্রীদের জন্য আলাদা হস্টেলও রয়েছে।