ফাইল চিত্র।
মোটরবাইকের পিছনে বাঁধা নিরীহ গ্যাস সিলিন্ডার। সন্দেহবশে সিলিন্ডার ভেঙে ফেললেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র জওয়ানেরা। বেরোল কয়েকশো বোতল ফেনসিডিল। ওই সিরাপের বোতল ঢোকানো হয়েছিল সিলিন্ডারের তলা খুলে। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের সীমান্তে বাইক চালিয়ে পিরোজপুর গ্রামে ফেরার পথে এ ভাবেই ধরা পড়ে গেলেন এক যুবক।
নাইট ভিশন ক্যামেরায় গঙ্গায় কিছু ভাসতে দেখে সন্দেহ হয় ওই জেলারই শামসেরগঞ্জের নিমতিতা আউট পোস্টের জওয়ানদের। স্পিডবোট নিয়ে গিয়ে তাঁরা দেখেন, থার্মোকলের বিশাল পাটাতন রয়েছে আধডোবা অবস্থায়। তার সঙ্গে বাঁধা ‘সাইলেন্ট মোড’-এ থাকা মোবাইল। ফোন এলেই আলো জ্বলছে মোবাইলে। জানা যাচ্ছে অবস্থান। পাটাতনটি বাংলাদেশের দিকে ভেসে চলেছে দু’চারটি বা একশো-দু’শো বোতল নয়, দু’হাজার বোতল ফেনসিডিল নিয়ে।
উত্তর ২৪ পরগনার তারালি থেকে হাকিমপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি টোটো। সন্দেহ হল। তল্লাশি চালিয়ে টোটোর আসনের তলায় পাওয়া গেল ১০৫টি ফেনসিডিলের বোতল।
এই ধরনের উদাহরণ অজস্র। বিএসএফের বক্তব্য, জোর নজরদারি, সিবিআই তদন্ত ইত্যাদির পরে গরু পাচার প্রায় বন্ধ। স্থানীয় যুবকদের একাংশ কার্যত বেকার। আর এই ধরনেরই বেশ কিছু যুবকের হাত ধরে দক্ষিণবঙ্গের সীমান্তে গরুর জায়গায় বেড়েছে কাশির সিরাপ ফেনসিডিলের চোরাকারবার। নেশার জন্য এই সিরাপ ব্যবহার করা হয় বাংলাদেশে। বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ফেনসিডিল জোগাড় ও বহন করা সহজ। পাচার করতে বিশেষ অসুবিধা নেই। বাংলাদেশে এর চাহিদা খুব।’’
বিএসএফের দাবি, গরু পাচারের মাথারা এখন হয় জেলে আর না-হয় পশ্চমবঙ্গ-ছাড়া। গ্রেফতার হয়েছেন মূল অভিযুক্ত এনামুল হক। গরু পাচার কাণ্ডে বিএসএফের কমান্ডান্ট সতীশ কুমার গ্রেফতার হওয়ায় জোর ধাক্কা খেয়েছে সামীন্তরক্ষী বাহিনীর ভাবমূর্তি। বাহিনীর এক কর্তা জানান, ভাবমূর্তি মেরামত করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। গরু পাচার রুখতে নজরদারি বাড়ানোয় এখন তা কার্যত বন্ধ। কার্যত তার বদলে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া-সহ দক্ষিণবঙ্গের সীমান্ত দিয়ে দেদার চলেছে ফেনসিডিল পাচার।
পাচারে পিছিয়ে নেই মেয়েরাও। সম্প্রতি ১৫টি ফেনসিডিলের বোতল-সহ ধরা পড়েন জলঙ্গির এক গৃহবধূ। অভাবই এই পথে নামার কারণ বলে জেরার মুখে জানান ওই মহিলা।