—ফাইল চিত্র।
রাজ্যপালের ভাষণ এবং বাজেট পেশের সময়ে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচারের সুযোগ থাকে। এ বার রাজ্যপালের ভাষণের সময়ে অধিবেশনে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকল ক্যামেরার।
ভাষণ শেষ করে পুলিশ ব্যান্ডের সুরে অধিবেশন কক্ষ ছাড়েন রাজ্যপাল। এ বার ব্যান্ডের মাঝখানেই শাসক ও বিরোধী পক্ষের নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সেরে হঠাৎই পুরোপুরি উল্টো দিকে ঘুরে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে চলে গেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের আচরণে দু’রকম প্রথা ভাঙার নজির তৈরি হল শুক্রবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে। সেই সঙ্গেই শাসক তৃণমূলের অধিকাংশ বিধায়ক সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর-বিরোধী হেডব্যান্ড পরে সভায় ঢুকে অন্য রকম নজির রাখলেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘প্রথা ভাঙতে দু’পক্ষই একই রকম সিদ্ধহস্ত! আমরা রাজ্যপালের বক্তৃতা চলাকালীন কোনও কিছুই বলিনি। কারণ, আমাদের কোনও কথা বা প্রতিবাদ থেকে দু’পক্ষই অন্য কোনও সুযোগ নিতে পারত। রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কের সময়ে আমরা যা বলার, বলব।’’
আরও পড়ুন: ‘টিপ্পনী’তে না গিয়ে বিধানসভায় রাজ্যের লিখে দেওয়া ভাষণই পড়লেন ধনখড়
লিখিত ভাষণ পাঠ করার পরে এ দিন রাজ্যপাল ধনখড় প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্ভাষণ সারেন। পুলিশ ব্যান্ডের তালে মার্শাল যখন তাঁকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, বিরোধী দলনেতা মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজনবাবুর আসনের দিকে এগিয়ে গিয়ে তখন সামান্য সময় কথা বলেন রাজ্যপাল। তার পরে শাসক বেঞ্চের দিকে নমস্কার সেরে স্পিকারের আসনের দিকে দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান তিনি। সভায় অনেকেই তখন হতভম্ব! অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে স্পিকারের ঘরে চলে যান রাজ্যপাল। চায়ের আসরে সেখানে স্পিকার বিমানবাবুর পাশাপাশিই যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী, পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তার আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আপত্তি জানানোর সব রকম প্রস্তুতি ছিল শাসক শিবিরে। রাজ্যপাল লিখিত বক্তৃতার বাইরে কিছু বললে দলের বিধায়কদের আপত্তি জানাতে বলা হয়েছিল। বিধায়কদের দেওয়া হয়েছিল হেডব্যান্ড এবং অ্যাপ্রন। ব্যান্ডে লেখা ছিল ‘নো সিএএ’, ‘নো এনপিআর’, অ্যাপ্রনে ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনা। সে সব পরেই বসেছিলেন পরেশ পাল, শিউলি সাহা, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, শীলভদ্র দত্তের মতো তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক। রাজ্যপাল সরকারি বক্তৃতার লাইন ছেড়ে না বেরোনোয় ধীরে ধীরে সে সব খুলে নামিয়ে রাখেন শাসক বিধায়কেরা।