গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিকাশ ভবনের সামনে যে সব শিক্ষিকা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, সেই সব আন্দোলনরতদের ‘বিজেপি ক্যাড্যার’ বলে চিহ্নিত করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বুধবার দুপুরে একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি তেমনই বলেছেন। প্রসঙ্গত, ওই পাঁচ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে। তাঁরা সকলেই আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই পরিস্থিতিতে ব্রাত্য তাঁর ফেসবুক পোস্টে যা লিখেছেন, তা হল—
বাম সরকারের আমলে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের অধীনে এসএসকে এবং এমএসকে-র সহায়ক/সহায়িকা, সম্প্রসারক/সম্প্রসারিকারা নামমাত্র সাম্মানিকের বিনিময়ে কাজ করতেন। কাজের নিশ্চয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসরকালীন সুযোগসুবিধা বলে কিছু ছিল না।
কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার ১ ডিসেম্বর, ২০২০ থেকে এসএসকে এবং এমএসকে-গুলিকে বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের অধীনে এনে একটি সুসংবদ্ধ রূপ দেয়। সহায়ক সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে মাসিক ১০,৩৪০ টাকা এবং সম্প্রসারক/সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১৩,৩৯০ টাকা করা হয়। এ ছাড়াও বাৎসরিক ৩% বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট চালু করা হয়েছে।
ব্রাত্য আরও লিখেছেন—
• প্রত্যেককে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে। • যাঁরা ৬০ বছর বয়েসে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, তাঁদের অবসরের সময় প্রত্যেকের জন্য ৩ লক্ষ টাকা এককালীন অবসর-ভাতা চালু করা হয়েছে। বাকিদের জন্যও এই সুবিধা দানের বিষয়ে অর্থ দপ্তরের সঙ্গে ফাইল চলছে। • ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত যাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের জন্য ১/২/২১ থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা হয়েছে। • মহিলাদের জন্য সরকারি নিয়মানুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। • এ ছাড়াও প্রত্যেককের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত-সহ বাৎসরিক ১৮ দিন ক্যাজুয়াল লিভ বা ছুটির অধিকার দেওয়া হয়েছে।
এর পরেই ব্রাত্য লিখেছেন, ‘তার পরেও যারা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার।’ বিকাশ ভবনের সামনে প্রকাশ্যে বিষপান করে পাঁচ শিক্ষিকার আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনীতি শুরু হয়েছে। অসুস্থ শিক্ষিকাদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য নেতারা। তার পর শিক্ষামন্ত্রীর এই পোস্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে, বিষয়টিকে ‘কঠোর’ নজরেই দেখছে রাজ্য সরকার।