মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
উচ্চশিক্ষায় রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের বিষয়ে শীর্ষ আদালতে যেতে চাওয়ার পাশাপাশি তাঁরা এখনও রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস সঙ্গে আলোচনা চান। তাঁরা সংলাপে বিশ্বাসী। বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এমনই জানালেন। পাশাপাশি এ দিনও মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার দাবি জানান তিনি।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও রাজ্যপালের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে কার্যাবলির তীব্র সমালোচনা করেন। সেই সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন উপাচার্য ও শিক্ষা প্রশাসকদের একাংশ ‘উচ্চ শিক্ষার সঙ্কট’ নিয়ে এ দিন ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে জাতীয় কনভেনশন আয়োজন করেছিলেন। মূল আলোচ্য ছিল, রাজ্যপালের উচ্চশিক্ষায় ‘হস্তক্ষেপ’। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে যাব। কিন্তু তার আগে জনমত তৈরি করতে চাইছি। চাইছি ওঁর (রাজ্যপালের) শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আমরা সংলাপে বিশ্বাসী। তাই কোর্টে যাওয়ার আগে চাই আলোচনা হোক। আমরা আচার্য হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকেই চাই। প্রায় এক বছর আগে এ নিয়ে বিধানসভায় বিল পাশ হয়েছে। রাজ্যপাল সেই বিলকে হিমঘরে পাঠাতে পারেন না। তিনি সই না করলে ফেরত পাঠান।’’ শিক্ষামন্ত্রীর সংযোজন, ওই বিল আবার পাশ করিয়ে রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, শুক্রবার স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ের অর্ডিন্যান্স বিল হিসেবে বিধানসভায় পাশ করানো হবে। সভায় রাজ্যের বক্তাদের অধিকাংশও মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার দাবি জানান। অধ্যাপক সুবোধ সরকার, অধ্যাপক অভিরূপ সরকার, অধ্যাপক শিবাজীপ্রতিম বসু, অধ্যাপক গৌতম পালদের এই বিষয়ে সুর একই ছিল।
কনভেনশনে ইউজিসির প্রাক্তন সদস্য এবং রাজনীতিবিদ যোগেন্দ্র যাদব, ইউজিসি-র প্রাক্তন সচিব আর কে চৌহান দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্বানন্দ, জেএনইউ-এর অধ্যাপিকা আর মহালক্ষ্মী, জামশেদপুর এক্সএলআরআই-এর অধ্যাপক এবং রাজনীতিবিদ গৌরব বল্লভ উচ্চশিক্ষায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ নিয়ে সরব হন। তাঁদের বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষায় গেরুয়াকরণের প্রচেষ্টার কথা উঠে আসে। এ রাজ্যে সম্প্রতি রাজ্যপাল অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ও আইপিএসদের উপাচার্যের চেয়ারে বসিয়েছেন। এগুলি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেই শুরু হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন যোগেন্দ্র। বক্তাদের অনেকেরই বক্তব্য, আরএসএস অথবা এবিভিপি ঘনিষ্ঠ হলে উপাচার্য হওয়া এখন সহজ।