রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর তৈরি করা খসড়া নিয়ে কী বলবে রাজ্য, তা ঠিক করতেই আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে, জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। একই সঙ্গে ইউজিসির খসড়া নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির লাইনে কথা বলছে ইউজিসি!’’ শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, ‘‘ইউজিসি দেশের বহুত্ববাদকে মান্যতা দিতে চাইছে না।’’
ইউজিসি স্বশাসিত সংস্থা। দেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নীতি থেকে শুরু করে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নির্ধারণ করার ক্ষমতা রয়েছে ওই সংস্থার হাতে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং উপাচার্য নিয়োগের পদ্ধতিতে সম্প্রতি বড় পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করেছে ইউজিসি। তাতে আচার্য তথা রাজ্যপালের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শুধু বাংলা নয়, অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিও একই সুরে কথা বলছে। তাদের দাবি, রাজ্য সরকারের অধিকার খর্ব করার চেষ্টা চলছে। রাজ্যের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে পুরোটাই নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে কেন্দ্র।
ইউজিসির খসড়া প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাংলার শিক্ষামন্ত্রী টেনে এনেছেন ‘বহুত্ববাদ’-এর কথা। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার শিক্ষাব্যবস্থা কুক্ষিগত করতে চাইছে। তারই উদাহরণ ইউজিসির নিয়োগ সংক্রান্ত নতুন খসড়া। ব্রাত্যের কথায়, ‘‘ইউজিসি সম্পূর্ণ রূপে দেশের বহুত্ববাদকে ধ্বংস করতে চাইছে। রাজ্য সরকার মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু ইউজিসির খসড়া সেই সিদ্ধান্তকে খর্ব করার চেষ্টা করছে।’’
ইউজিসির খসড়ায় শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এখন থেকে কেবল প্রার্থীদের ইউজিসি নেট, সেট এবং পিএইচডির বিষয়ের উপরেই গুরুত্ব দেওয়া হবে। স্নাতকোত্তরে অন্য বিষয় নিয়ে পড়লেও আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। উপাচার্য পদে প্রার্থীদের যোগ্যতাতেও বদল আসতে চলেছে। শিক্ষাবিদদের পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষেত্রে পেশাদার, শিল্পপতি এবং বেসরকারি ফার্মের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের, অর্থাৎ ‘নন অ্যাকাডেমিক’দেরও উপাচার্য পদে নিয়োগ করা যাবে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই খসড়া নিয়ে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজ্যগুলিকে মতামত জানাতে বলা হয়েছে। তার পরই তড়িঘড়ি রাজ্য সরকার একটি আট সদস্যের কমিটি গঠন করে। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেবে তারা। তার পরেই ইউজিসির খসড়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।