এ বার স্কুলে তৈরি করা হচ্ছে বয়েজ় ক্লাব। প্রতীকী ছবি।
শৈশব থেকে কৈশোরে পা রাখার আলো-আঁধারির সময়টায় শুধু মেয়েদের নয়, নানান সমস্যা হয় ছেলেদেরও। এবং সেই সব সমস্যা অনেক সময়েই সামাজিক জটিলতার সৃষ্টি করে। বাল্য বিবাহ রোধ-সহ নানা বিষয়ে মেয়েদের সচেতন করতে কন্যাশ্রী ক্লাব গড়া হয়েছে স্কুলে স্কুলে। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রদের মধ্যে বয়ঃসন্ধি কালের সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে এ বার স্কুলে তৈরি করা হচ্ছে বয়েজ় ক্লাব। স্বাস্থ্য থেকে পরিবেশ, নিয়মানুবর্তিতা থেকে নানান সামাজিক বিষয়— সবই দেখবে ‘বন্ধু মহল’, ‘বান্ধব’ ইত্যাদি নামের ওই সব স্কুল ক্লাব।
সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ওই জেলার বিভিন্ন স্কুলে বয়েজ় ক্লাব তৈরি করতে বলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকেরা জানান, জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট চিঠি জেলা স্কুল পরিদর্শকেরা মেল করে তাঁদের কাছে পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, ওই ক্লাবের নাম দেওয়া হোক ‘বন্ধু মহল’। ওই ক্লাবে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-প্রতিনিধি থাকতে হবে। এক জনকে ক্লাবের প্রধান এবং অন্য এক জনকে উপপ্রধান হিসেবে নির্বাচন করতে হবে।
পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি দেখভাল করার দায়িত্ব দেওয়া হবে বন্ধু মহল ক্লাবের এক জনকে। কেউ দেখবে পরিবেশ, কারও উপরে থাকবে নিয়মানুবর্তিতা রক্ষার দায়িত্ব, কেউ বা নজর দেবে সামাজিক বিষয়ে। তবে সব থেকে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ছেলেদের বয়ঃসন্ধি কালের সমস্যাগুলোর উপরে। ক্লাবের সামগ্রিক পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবেন স্কুলেরই এক জন শিক্ষক।
কোনও মেয়ে দীর্ঘদিন স্কুলে না-এলে সে কেন আসছে না, খোঁজ নেয় কন্যাশ্রী ক্লাব। একই ভাবে কোনও ছেলে দীর্ঘদিন স্কুলে না-এলে খোঁজ নেবে বন্ধু মহল। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘সব জেলার স্কুলেই এমন ক্লাব তৈরি হলে আশা করা যায়, বয়ঃসন্ধি কালের সমস্যা সহজে মেটানো যাবে।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি জানান, তাঁদের স্কুলে ইতিমধ্যেই অষ্টম থেকে দ্বাদশের ছাত্রদের নিয়ে ‘বান্ধব’ নামে ক্লাব চালু আছে। চন্দন বলেন, ‘‘এই ধরনের বয়েজ় ক্লাব খুবই উপযোগী। মোবাইলের নেশা থেকে শুরু করে নানা সমস্যার কথা কিশোর বয়সের অনেক ছেলেই তাদের মা-বাবাকে বলতে পারে না। তার থেকে অনেক ক্ষেত্রে ঘিরে ধরে অবসাদ। বন্ধুদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই ধরনের সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব।’’