প্রতীকী ছবি।
পরিষ্কার ‘না’ বলেছিল মেয়েটি। ছেলেটি শোনেনি। আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে হোয়াটঅ্যাপ করত। এর মধ্যেই দু’জনের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়েছে। মেয়েটি পেয়েছে প্রায় ৮০% নম্বর। ছেলেটিও প্রথম বিভাগে পাশ করেছে।
দু’জনেরই বাড়ি জলপাইগুড়িতে। ৬ জুলাই ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খায় ছেলেটি। স্থানীয় ভাবে চিকিৎসার পরে তাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ১৬ জুলাই তার মৃত্যু হয়। ১৮ জুলাই প্রতিবেশী ওই নাবালিকার বিরুদ্ধে ছেলেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করেন ওই কিশোরের বাবা। তিনি জানান, ‘‘৬ জুলাই ছেলের সঙ্গে ওই কিশোরীর হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথন হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ছেলে বিষ খাওয়ার কথা জানাচ্ছে কিশোরীকে। ওই কিশোরী জবাব দেয়, ‘‘তুই মরে যা।’’ এই মানসিক আঘাত সহ্য করতে না পেরে বিষ খায় ছেলে।’’
রবিবার ওই কিশোরী থানায় আত্মসমর্পণ করেছে। এ দিন জুভেনাইল কোর্ট বন্ধ থাকায় বিশেষ আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে এক দিনের জন্য হোমে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ওই কিশোরীর বক্তব্য, ‘‘১৩ ফেব্রুয়ারি আমাদের সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার কথা পরিষ্কার জানাই। তার পরেও উত্ত্যক্ত করত। আত্মহত্যার হুমকি দিত। আমার প্ররোচনা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’’
অনেকেরই দাবি, মেয়েটি পরিষ্কার ‘না’ বলেছিল। তারপরেও তাকে উত্ত্যক্ত করা তো অপরাধ। সেই সঙ্গে, ছেলেটি যে আত্মহত্যা করবে বলে তাকে হুমকি দিত, তা-ও তো অনুচিত। তবে জলপাইগুড়ি আদালতের আইনজীবী সন্দীপ দত্ত জানিয়েছেন, ‘‘পুলিশ প্রাথমিক ভাবে যা তথ্য প্রমাণ পেয়েছে, তার ভিত্তিতেই কিশোরী অভিযুক্ত হয়েছে।’’ জেলার সরকারি আইনজীবী গৌতম দাস জানান, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের তথ্য প্রমাণ হিসেবে গণ্যও হবে। কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার জানান, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখেই তদন্ত হচ্ছে।’’