BJP

পদযাত্রা বাতিল! রাজপথ ছেড়ে যুবদের মেঠো রাস্তায় নামাতে বলল পদ্মের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব

রাজ্যের কর্মসংস্থান নেই অভিযোগে সিঙ্গুর থেকে সিলিকন ভ্যালি কর্মসূচি ঠিক করেছিল বিজেপির যুব মোর্চা। কিন্তু এখন তা বাতিল হতে চলেছে। তার বদলে নতুন কর্মসূচির প্রস্তুতির নির্দেশ নেতৃত্বের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২২ ১৫:২৪
Share:

মেঠো পথেই রাজনীতি চাইছে বিজেপি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

পরিকল্পনা ছিল হুগলির সিঙ্গুর থেকে পদযাত্রা যাবে রাজারহাটের প্রস্তাবিত সিলিকন ভ্যালিতে। রাজ্যে কর্মসংস্থান নিয়ে আন্দোলনের এমন পরিকল্পনা ছিল রাজ্য বিজেপির যুব শাখার। সেই মতো যুব মোর্চা পরিকল্পনা করলেও তা শেষ মুহূর্তে বাতিল হতে চলেছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর। তার বদলে যুব মোর্চাকে কর্মসংস্থানের স্লোগান নিয়েই রাজ্যের সর্বত্র গ্রামে গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রে খবর, তেমনটা চাইছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। ফলে আগের পরিকল্পনা ছেড়ে নতুন কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে যুব মোর্চা। তাতে মেঠো পথের সিঙ্গুরে যাওয়া হলেও রাজপথের ধারে সিলিকন ভ্যালি কর্মসূচিতে থাকবে না। যদিও সংগঠনের কেউ কেউ চাইছেন পুরনো পরিকল্পনা বজায় রেখেই গ্রাম অভিযান হোক।

Advertisement

দলের ‘নবান্ন অভিযান’ সফল হয়েছে বলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সুকান্ত মজুমদারদের সার্টিফিকেট দেয়। এর পরেও লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলে। সেই মতো দলের যুব শাখা কর্মসংস্থান নিয়ে রাজ্যের চিত্র এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির পরিস্থিতি তুলে ধরতে কর্মসূচি ঠিক করেছিল। তাতে ঠিক হয় সিঙ্গুরের যে জমিতে টাটার ন্যানো কারখানা তৈরির কথা ছিল সেখান থেকে রাজারহাটের প্রস্তাবিত সিলিকন ভ্যালি পর্যন্ত একটি যাত্রা হবে। হুগলি, হাওড়া ও কলকাতা হয়ে ৭ দিন ধরে চলবে যাত্রা। পরিকল্পনা হয়ে যাওয়ার পরে শুধু দিনক্ষণ ঘোষণারই অপেক্ষা ছিল। কিন্তু শনিবার বর্ধমানে মোর্চার রাজ্য কার্যকারিণীর বৈঠকে ঠিক হয় এখন শহুরে এলাকায় আন্দোলন না করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামে যেতে হবে যুব মোর্চাকে। এর পরেই নতুন কর্মসূচির ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে মোর্চা।

সিঙ্গুর থেকে সিলিকন ভ্যালি যাত্রার কর্মসূচি নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য, শুরুটা গ্রামীণ এলাকায় হলেও বেশিটা যাত্রাই চলবে শহুরে এলাকায়। এর মধ্যে আবার অনেকটা অংশ জাতীয় সড়ক। তার ফলে আন্দোলনের কাঙ্ক্ষিত অভিঘাত মিলবে না। সেই কারণেই আপাতত জেলা অনুসারে কর্মসূচি সাজানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যুব মোর্চাকে। এ নিয়ে মোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ বলেন, ‘‘এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। তবে কিছু বদল আসতে পারে পুরনো কর্মসূচিতে। আমরা আর বড় মাপের আন্দোলনে নামব।’’

Advertisement

ইন্দ্রনীল বিস্তারিত না জানালেও, বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ্যের সার্বিক কর্মসংস্থানের চিত্র তুলে ধরাই হবে এই আন্দোলনের লক্ষ্য। সেই সঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কারা সরকারি চাকরি পেয়েছেন, কারা বেসরকারি চাকরি পেয়েছেন বা প্রশিক্ষণের সুযোগ কাদের মিলেছে তার পরিসংখ্যানও জেলা অনুযায়ী সংগ্রহ করবে মোর্চা। কোন জেলায় কর্মসংস্থানের কেমন পরিস্থিতি রয়েছে তারও সমীক্ষা হবে। সেই সঙ্গে কেন্দ্র কোন কোন বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে এবং বিজেপিশাসিত বিভিন্ন রাজ্যে কর্মসংস্থানের ছবিটা ঠিক কেমন তা-ও গ্রামের মানুষের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্য নিয়েছে মোর্চা। বিজেপি মনে করছে, এর ফলে গ্রামে গ্রামে পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলকে চাঙ্গা করাও যাবে আবার কর্মসংস্থানের প্রকৃত ছবিও সামনে আসবে।

প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপির সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব পাওয়া সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনশল তাঁর সাম্প্রতিক বাংলা সফরেও এই বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে ৩টি সাংগঠনিক বৈঠকেই তিনি বুথে, বুথে সংগঠন এবং বাড়ি, বাড়ি জনসংযোগের নির্দেশ দিয়েছেন। দলের সব মোর্চা এবং শাখাকেও যে গ্রামে যেতে হবে সেই নির্দেশও দিয়েছেন। এর পরে পরেই মোর্চার কর্মসূচি বদলের ভাবনা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement