দিল্লির থানায় অখিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ লকেটের। — ফাইল ছবি।
মমতা সরকারের মন্ত্রী তথা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতা অখিল গিরির বিরুদ্ধে চাপ আরও বাড়াচ্ছে বিজেপি। এ বার রাজধানী দিল্লিতে অখিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়।
তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু বিজেপি ছাড়তে নারাজ। এ বার রাজ্যের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিলের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন বিজেপি সাংসদ লকেট। রবিবার সকালে রাজধানীর নর্থ অ্যাভিনিউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। লকেট পুলিশকে অনুরোধ জানিয়েছেন, অবিলম্বে তাঁর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এফআইআর দায়ের করে যেন অখিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
থানা থেকে বেরিয়ে অবশ্য লকেট দাবি করেছেন, এফআইআর করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দেশের রাষ্ট্রপতিকে যে ভাবে অখিল গিরি অপমান করেছেন, তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। সবচেয়ে বড় কথা, নন্দীগ্রামের ওই সভায় অখিলের পাশেই ছিলেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা! এটা শুধু রাষ্ট্রপতিকে অপমান নয়, পুরো আদিবাসী সমাজকে অপমান করা এবং মহিলাদের অপমান করা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মহিলা হয়ে একজন মহিলার অপমানের পরেও কোনও স্টেটমেন্ট (বিবৃতি) নেই তাঁর। ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেল। যখন উত্তরপ্রদেশে কিছু হয়, মমতা লিডারদের (নেতাদের) দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিবৃতি দেওয়ান। বুদ্ধিজীবীরা সঙ্গে সঙ্গে মোমবাতি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। সাংসদরা সঙ্গে সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের সেই স্পটে (ঘটনার জায়গায়) চলে যাচ্ছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মমতার কোনও বুদ্ধিজীবী, নেতা, মন্ত্রীর কোনও বিবৃতি নেই। আমরা চাই, মমতা অখিল গিরিকে বরখাস্ত করুন এবং বিবৃতি দিন। অখিল গিরিকে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে বসে রাষ্ট্রপতির পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।’’
সম্প্রতি নন্দীগ্রামে গিয়ে বিজেপির গুন্ডামির প্রতিবাদ সভায় দাঁড়িয়ে স্থানীয় বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করেন অখিল। তা নিয়েই সংগঠিত ভাবে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ শুরু করে বিজেপি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ সমাবেশের পাশাপাশি অখিলের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। এ বার বিষয়টি সর্বভারতীয় রূপ পেল রাজধানীর থানায় অখিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের মধ্যে দিয়ে।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় অখিলের মন্তব্যের নিন্দা করে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব স্পষ্ট করেছে তৃণমূলও। কিন্তু বিজেপি তা মানতে নারাজ। তারা মুখ্যমন্ত্রীর বয়ানের দাবিতেই অনড়। এই প্রেক্ষিতে দিল্লির থানায় বাংলার সাংসদদের অভিযোগ দায়েরের ঘটনা নয়া মাত্রা যোগ করল। অখিলের সমালোচনাও চলছে সব মহলে। শনিবারই অখিলের সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।